সুরা আল-নিসা
পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি
يٰۤاَيُّهَا
النَّاسُ اتَّقُوۡا رَبَّكُمُ الَّذِىۡ خَلَقَكُمۡ مِّنۡ نَّفۡسٍ
وَّاحِدَةٍ وَّخَلَقَ مِنۡهَا زَوۡجَهَا وَبَثَّ مِنۡهُمَا رِجَالاً
كَثِيۡرًا وَّنِسَآءًۚ وَاتَّقُوۡا اللّٰهَ الَّذِىۡ تَسَآءَلُوۡنَ بِهٖ
وَالۡاَرۡحَامَؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلَيۡكُمۡ رَقِيۡبًا
১.) হে মানব জাতি! তোমাদের রবকে ভয় করো। তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি
প্রাণ থেকে। আর সেই একই প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া। তারপর তাদের
দু’জনার থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। সেই আল্লাহকে
ভয় করো যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের কাছ থেকে নিজেদের হক আদায় করে থাকো
এবং আত্মীয়তা ও নিকট সম্পর্ক বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকো। নিশ্চিতভাবে জেনে
রাখো, আল্লাহ তোমাদের ওপর কড়া নজর রেখেছেন।
وَاٰتُوا الۡيَتٰمٰٓى اَمۡوَالَهُمۡۚ وَلَا تَتَبَدَّلُوۡا الۡخَبِيۡثَ
بِالطَّيِّبِ وَلَا تَاۡكُلُوۡۤا اَمۡوَاهُمۡ اِلٰٓى اَمۡوَالِكُمۡؕ
اِنَّهٗ كَانَ حُوۡبًا كَبِيۡرًا
২.) এতিমদেরকে তাদের ধন-সম্পদ ফিরিয়ে দাও। ভালো সম্পদের সাথে মন্দ সম্পদ
বদল করো না। আর তাদের সম্পদ তোমাদের সম্পদের সাথে মিশিয়ে গ্রাস করো না।
এটা মহাপাপ।
وَاِنۡ خِفۡتُمۡ اَلَّا تُقۡسِطُوۡا فِىۡ الۡيَتٰمٰى فَانكِحُوۡا مَا
طَابَ لَكُمۡ مِّنَ النِّسَآءِ مَثۡنٰى وَثُلٰثَ وَرُبٰعَۚ فَاِنۡ
خِفۡتُمۡ اَلَّا تَعۡدِلُوۡا فَوَاحِدَةً اَوۡ مَا مَلَكَتۡ
اَيۡمَانُكُمۡؕ ذٰلِكَ اَدۡنٰٓى اَلَّا تَعُوۡلُوۡا
৩.) আর যদি তোমরা এতিমদের (মেয়েদের) সাথে বে-ইনসাফী করার ব্যাপারে ভয় করো,
তাহলে যেসব মেয়েদের তোমরা পছন্দ করো তাদের মধ্য থেকে দুই, তিন বা চারজনকে
বিয়ে করো। কিন্তু যদি তোমরা তাদের সাথে ইনসাফ করতে পারবে না বলে আশঙ্কা
করো, তাহলে একজনকেই বিয়ে করো। অথবা তোমাদের অধিকারে সেসব মেয়ে আছে তাদেরকে
বিয়ে করো। বে-ইনসাফীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এটিই অধিকতর সঠিক পদ্ধতি।
وَاٰتُوۡا النِّسَآءَ صَدُقٰتِهِنَّ نِحۡلَةًؕ فَاِنۡ طِبۡنَ لَكُمۡ
عَنۡ شَىۡءٍ مِّنۡهُ نَفۡسًا فَكُلُوۡهُ هَنِيۡٓـًٔا مَّرِيۡٓـًٔا
৪.) আর আনন্দের সাথে (ফরয মনে করে) স্ত্রীদের মোহরানা আদায় করে দাও। তবে
যদি তারা নিজেরাই নিজেদের ইচ্ছায় মোহরানার কিছু অংশ মাফ করে দেয়, তাহলে
তোমরা সানন্দে তা খেতে পারো।
وَلَا تُؤۡتُوۡا السُّفَهَآءَ اَمۡوَالَكُمُ الَّتِىۡ جَعَلَ اللّٰهُ
لَكُمۡ قِيٰمًا وَّارۡزُقُوۡهُمۡ فِيۡهَا وَاكۡسُوۡهُمۡ وَقُوۡلُوۡا لَهُمۡ
قَوۡلاً مَّعۡرُوۡفًا
৫.) আর তোমাদের যে ধন–সম্পদকে আল্লাহ তোমাদের জীবন ধারণের মাধ্যমে পরিণত
করেছেন, তা নির্বোধদের হাতে তুলে দিয়ো না। তবে তাদের খাওয়া পরার ব্যবস্থা
করো এবং সদুপদেশ দাও।
وَابۡتَلُوۡا الۡيَتٰمٰى حَتّٰىۤ اِذَا بَلَغُوۡا النِّكَاحَۚ فَاِنۡ
اٰنَسۡتُمۡ مِّنۡهُمۡ رُشۡدًا فَادۡفَعُوۡۤا اِلَيۡهِمۡ اَمۡوَالَهُمۡۚ
وَلَا تَاۡكُلُوۡهَاۤ اِسۡرَافًا وَّبِدَارًا اَنۡ يَّكۡبَرُوۡاؕ وَمَنۡ
كَانَ غَنِيًّا فَلۡيَسۡتَعۡفِفۡۚ وَمَنۡ كَانَ فَقِيۡرًا فَلۡيَاۡكُلۡ
بِالۡمَعۡرُوۡفِؕ فَاِذَا دَفَعۡتُمۡ اِلَيۡهِمۡ اَمۡوَالَهُمۡ
فَاَشۡهِدُوۡا عَلَيۡهِمۡؕ وَكَفٰى بِاللّٰهِ حَسِيۡبًا
৬.) আর এতিমদের পরীক্ষা করতে থাকো, যতদিন না তারা বিবাহযোগ্য বয়সে পৌঁছে
যায়। তারপর যদি তোমরা তাদের মধ্যে যোগ্যতার সন্ধান পাও, তাহলে তাদের সম্পদ
তাদের হাতে সোপর্দ করে দাও। তারা বড় হয়ে নিজেদের অধিকার দাবী করবে, এ ভয়ে
কখনো ইনসাফের সীমানা অতিক্রম করে তাদের সম্পদ তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না।
এতিমদের যে অভিভাবক সম্পদশালী হবে সে যেন পরহেজগারী অবলম্বন করে (অর্থাৎ
অর্থ গ্রহণ না করে) আর যে গরীব হবে সে যেন প্রচলিত পদ্ধতিতে খায়। তারপর
তাদের সম্পদ যখন তাদের হাতে সোপর্দ করতে যাবে তখন তাতে লোকদেরকে সাক্ষী
বানাও। আর হিসেব নেবার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।
لِّلرِّجَالِ نَصِيۡبٌ مِّمَّا تَرَكَ الۡوَالِدَانِ وَالۡاَقۡرَبُوۡنَ
وَلِلنِّسَآءِ نَصِيۡبٌ مِّمَّا تَرَكَ الۡوَالِدَانِ وَالۡاَقۡرَبُوۡنَ
مِمَّا قَلَّ مِنۡهُ اَوۡ كَثُرَؕ نَصِيۡبًا مَّفۡرُوۡضًا
৭.) মা–বাপ ও আত্মীয়-স্বজনরা যে ধন-সম্পত্তি রেখে গেছে তাতে পুরুষদের অংশ
রয়েছে। আর মেয়েদেরও অংশ রয়েছে সেই ধন-সম্পত্তিতে, যা মা-বাপ ও
আত্মীয়-স্বজনরা রেখে গেছে, তা সামান্য হোক বা বেশী এবং এ অংশ (আল্লাহর পক্ষ
থেকে) নির্ধারিত।
وَاِذَا حَضَرَ الۡقِسۡمَةَ اُولُوۡا الۡقُرۡبَىٰ وَالۡيَتٰمٰى
وَالۡمَسٰكِيۡنُ فَارۡزُقُوۡهُمۡ مِّنۡهُ وَقُوۡلُوۡا لَهُمۡ قَوۡلاً
مَّعۡرُوۡفًا
৮.) ধন-সম্পত্তি ভাগ-বাঁটোয়ারার সময় আত্মীয়–স্বজন, এতিম ও মিসকিনরা এলে
তাদেরকেও ঐ সম্পদ থেকে কিছু দিয়ে দাও এবং তাদের সাথে ভালোভাবে কথা বলো।
وَلۡيَخۡشَ الَّذِيۡنَ لَوۡ تَرَكُوۡا مِنۡ خَلۡفِهِمۡ ذُرِّيَّةً ضِعٰفًا
خَافُوۡا عَلَيۡهِمۡ فَلۡيَتَّقُوۡا اللّٰهَ وَلۡيَقُوۡلُوۡا قَوۡلاً
سَدِيۡدًا
৯.) লোকদের একথা মনে করে ভয় করা উচিত, যদি তারা অসহায় সন্তান পিছনে ছেড়ে
রেখে যেতো, তাহলে মরার সময় নিজেদের সন্তানদের ব্যাপারে তাদের কতই না আশঙ্কা
হতো! কাজেই তাদের আল্লাহকে ভয় করা ও ন্যায়সঙ্গত কথা বলা উচিত।
اِنَّ الَّذِيۡنَ يَاۡكُلُوۡنَ اَمۡوَالَ الۡيَتٰمٰى ظُلۡمًا اِنَّمَا
يَاۡكُلُوۡنَ فِىۡ بُطُوۡنِهِمۡ نَارًاؕ وَّسَيَصۡلَوۡنَ سَعِيۡرًا
১০.) যারা এতিমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়, তারা আগুন দিয়ে নিজেদের পেট
পূর্ণ করে এবং তাদেরকে অবশ্যি জাহান্নামের জ্বলন্ত আগুনে ফেলে দেয়া হবে।
يُوۡصِيۡكُمُ اللّٰهُ فِىۡۤ اَوۡلَادِكُمۡ لِلذَّكَرِ مِثۡلُ حَظِّ
الۡاُنۡثَيَيۡنِۚ فَاِنۡ كُنَّ نِسَآءً فَوۡقَ اثۡنَتَيۡنِ فَلَهُنَّ
ثُلُثَا مَا تَرَكَۚ وَاِنۡ كَانَتۡ وٰحِدَةً فَلَهَا النِّصۡفُؕ
وَلِاَبَوَيۡهِ لِكُلِّ وٰحِدٍ مِّنۡهُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ اِنۡ
كَانَ لَهٗ وَلَدٌۚ فَاِنۡ لَّمۡ يَكُنۡ لَّهٗ وَلَدٌ وَّوَرِثَهٗۤ
اَبَوَاهُ فَلِاُمِّهِ الثُّلُثُؕ فَاِنۡ كَانَ لَهٗۤ اِخۡوَةٌ
فَلِاُمِّهِ السُّدُسُؕ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِيَّةٍ يُّوۡصِىۡ بِهَاۤ اَوۡ
دَيۡنٍؕ اٰبَآؤُكُمۡ وَاَبۡنَآؤُكُمۡ لَا تَدۡرُوۡنَ اَيُّهُمۡ اَقۡرَبُ
لَكُمۡ نَفۡعًاؕ فَرِيۡضَةً مِّنَ اللّٰهِؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ
عَلِيۡمًا حَكِيۡمًا
১১.) তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেনঃ
পুরুষদের অংশ দু’জন মেয়ের সমান। যদি (মৃতের ওয়ারিস) দু’য়ের বেশী মেয়ে হয়,
তাহলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিনভাগের দু’ভাগ তাদের দাও। আর যদি একটি মেয়ে
ওয়ারিস হয়, তাহলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক তার। যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান
থাকে, তাহলে তার বাপ-মা প্রত্যেকে সম্পত্তির ছয় ভাগের একভাগ পাবে। আর যদি
তার সন্তান না থাকে এবং বাপ-মা তার ওয়ারিস হয়, তাহলে মাকে তিন ভাগের একভাগ
দিতে হবে। যদি মৃতের ভাই-বোনও থাকে, তাহলে মা ছয় ভাগের একভাগ পাবে। (এ
সমস্ত অংশ বের করতে হবে) মৃত ব্যক্তি যে অসিয়ত করে গেছে তা পূর্ণ করার এবং এ
যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর। তোমরা জানো না তোমাদের বাপ-মা ও তোমাদের
সন্তানদের মধ্যে উপকারের দিক দিয়ে কে তোমাদের বেশী নিকটবর্তী। এসব অংশ
আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ অবশ্যি সকল সত্য জানেন এবং সকল
কল্যাণময় ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন।
وَلَكُمۡ نِصۡفُ مَا تَرَكَ اَزۡوَاجُكُمۡ اِنۡ لَّمۡ يَكُنۡ لَّهُنَّ
وَلَدٌۚ فَاِنۡ كَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَكُمُ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكۡنَ
مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِيَّةٍ يُّوۡصِيۡنَ بِهَاۤ اَوۡ دَيۡنٍؕ وَلَهُنَّ
الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكۡتُمۡ اِنۡ لَّمۡ يَكُنۡ لَّكُمۡ وَلَدٌۚ فَاِنۡ
كَانَ لَكُمۡ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكۡتُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ
وَصِيَّةٍ تُوۡصُوۡنَ بِهَاۤ اَوۡ دَيۡنٍؕ وَاِنۡ كَانَ رَجُلٌ يُّوۡرَثُ
كَلٰلَةً اَوِ امۡرَاَةٌ وَّلَهٗۤ اَخٌ اَوۡ اُخۡتٌ فَلِكُلِّ وَاحِدٍ
مِّنۡهُمَا السُّدُسُۚ فَاِنۡ كَانُوۡۤا اَكۡثَرَ مِنۡ ذٰلِكَ فَهُمۡ
شُرَكَآءُ فِىۡ الثُّلُثِؕ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِيَّةٍ يُّوۡصٰى بِهَاۤ اَوۡ
دَيۡنٍۙ غَيۡرَ مُضَآرٍّۚ وَصِيَّةً مِّنَ اللّٰهِؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌ
حَلِيۡمٌؕ
১২.) তোমাদের স্ত্রীরা যদি নিঃসন্তান হয়, তাহলে তারা যা কিছু ছেড়ে যায় তার
অর্ধেক তোমরা পাবে। অন্যথায় তাদের সন্তান থাকলে যে অসিয়ত তারা করে গেছে তা
পূর্ণ করার এবং যে ঋণ তারা রেখে গেছে তা আদায় করার পর পরিত্যক্ত সম্পত্তির
চার ভাগের এক ভাগ পাবে। অন্যথায় তোমাদের সন্তান থাকলে তোমাদের অসিয়ত পূর্ণ
করার ও তোমাদের রেখে যাওয়া ঋণ আদায় করার পর তারা সম্পত্তির আট ভাগের একভাগ
পাবে। আর যদি পুরুষ বা স্ত্রীলোকের (যার মীরাস বন্টন হবে) সন্তান না থাকে
এবং বাপ-মাও জীবিত না থাকে কিন্তু এক ভাই বা এক বোন থাকে, তাহলে ভাই ও বোন
প্রত্যেকেই ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে। তবে ভাই-বোন একজনের বেশী হলে সমগ্র
পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের একভাগে তারা সবাই শরীক হবে, যে অসিয়ত করা
হয়েছে তা পূর্ণ করার এবং যে ঋণ মৃত ব্যক্তি রেখে গেছে তা আদায় করার পর যদি
তা ক্ষতিকর না হয়। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ, আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ,
সর্বদর্শী ও সহিষ্ণু।
تِلۡكَ حُدُوۡدُ اللّٰهِؕ وَمَنۡ يُّطِعِ اللّٰهَ وَرَسُوۡلَهٗ
يُدۡخِلۡهُ جَنّٰتٍ تَجۡرِىۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ خٰلِدِيۡنَ
فِيۡهَاؕ وَذٰلِكَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِيۡمُ
১৩.) এগুলো আল্লাহ নির্ধারিত সীমারেখা। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের
আনুগত্য করবে, তাকে আল্লাহ এমন বাগীচায় প্রবেশ করাবেন, যার নিম্নদেশে
ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য।
وَمَنۡ يَّعۡصِ اللّٰهَ وَرَسُوۡلَهٗ وَيَتَعَدَّ حُدُوۡدَهٗ يُدۡخِلۡهُ نَارًا خَالِدًا فِيۡهَا وَلَهٗ عَذَابٌ مُّهِيۡنٌ
১৪.) আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নাফরমানি করবে এবং তাঁর
নির্ধারিত সীমারেখা অতিক্রম করে যাবে, তাকে আল্লাহ আগুনে ফেলে দেবেন।
সেখানে সে থাকবে চিরকাল, আর তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনা ও অপমানজনক শাস্তি।
وَالّٰتِىۡ يَاۡتِيۡنَ الۡفَاحِشَةَ مِنۡ نِّسَآٮِٕكُمۡ فَاسۡتَشۡهِدُوۡا
عَلَيۡهِنَّ اَرۡبَعَةً مِّنۡكُمۡۚ فَاِنۡ شَهِدُوۡا فَاَمۡسِكُوۡهُنَّ
فِىۡ الۡبُيُوۡتِ حَتّٰى يَتَوَفّٰٮهُنَّ الۡمَوۡتُ اَوۡ يَجۡعَلَ اللّٰهُ
لَهُنَّ سَبِيۡلاً
১৫.) তোমাদের নারীদের মধ্যে থেকে যারা ব্যভিচার করে তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের
নিজেদের মধ্য থেকে চারজন সাক্ষী নিয়ে এসো। আর চার জন সাক্ষ্য দিয়ে যাবার
পর তাদেরকে (নারীদের) গৃহে আবদ্ধ করে রাখো, যে পর্যন্ত না তাদের মৃত্যু এসে
যায় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য কোন পথ বের করে দেন।
وَالَّذٰنِ يَاۡتِيٰنِهَا مِنۡكُمۡ فَاٰذُوۡهُمَاۚ فَاِنۡ تَابَا
وَاَصۡلَحَا فَاَعۡرِضُوۡا عَنۡهُمَآؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ تَوَّابًا
رَّحِيۡمًا
১৬.) আর তোমাদের মধ্য থেকে যারা (দুজন) এতে লিপ্ত হবে তাদেরকে শাস্তি দাও।
তারপর যদি তারা তাওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে নেয়, তাহলে তাদেরকে ছেড়ে
দাও। কেননা আল্লাহ বড়ই তাওবা কবুলকারী ও অনুগ্রহশীল।
اِنَّمَا التَّوۡبَةُ عَلَى اللّٰهِ لِلَّذِيۡنَ يَعۡمَلُوۡنَ السُّوۡٓءَ
بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوۡبُوۡنَ مِنۡ قَرِيۡبٍ فَاُولٰٓٮِٕكَ يَتُوۡبُ
اللّٰهُ عَلَيۡهِمۡؕ وَكَانَ اللّٰهُ عَلِيۡمًا حَكِيۡمًا
১৭.) তবে একথা জেনে রাখো, আল্লাহর কাছে তাওবা কবুল হবার অধিকার এক মাত্র
তারাই লাভ করে যারা অজ্ঞতার কারণে কোন খারাপকাজ করে বসে এবং তারপর অতি
দ্রুত তাওবা করে। এ ধরনের লোকদের প্রতি আল্লাহ আবার তাঁর অনুগ্রহের দৃষ্টি
নিবদ্ধ করেন এবং আল্লাহ সমস্ত বিষয়ের খবর রাখেন, তিনি জ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ।
وَلَيۡسَتِ التَّوۡبَةُ لِلَّذِيۡنَ يَعۡمَلُوۡنَ السَّيِّاٰتِۚ حَتّٰىۤ
اِذَا حَضَرَ اَحَدَهُمُ الۡمَوۡتُ قَالَ اِنِّىۡ تُبۡتُ الۡـٰٔنَ وَلَا
الَّذِيۡنَ يَمُوۡتُوۡنَ وَهُمۡ كُفَّارٌؕ اُولٰٓٮِٕكَ اَعۡتَدۡنَا لَهُمۡ
عَذَابًا اَلِيۡمًا
১৮.) কিন্তু তাওবা তাদের জন্য নয়, যারা খারাপ কাজ করে যেতেই থাকে, এমন কি
তাদের কারো মৃত্যুর সময় এসে গেলে সে বলে, এখন আমি তাওবা করলাম। অনুরূপভাবে
তাওবা তাদের জন্যও নয় যারা মৃত্যুর সময় পর্যন্ত কাফের থাকে। এমন সব লোকদের
জন্য তো আমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তৈরী করে রেখেছি।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لَا يَحِلُّ لَكُمۡ اَنۡ تَرِثُوۡا
النِّسَآءَ كَرۡهًاؕ وَّلَا تَعۡضُلُوۡهُنَّ لِتَذۡهَبُوۡا بِبَعۡضِ مَاۤ
اٰتَيۡتُمُوۡهُنَّ اِلَّاۤ اَنۡ يَّاۡتِيۡنَ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍۚ
وَعَاشِرُوۡهُنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِۚ فَاِنۡ كَرِهۡتُمُوۡهُنَّ فَعَسٰىۤ
اَنۡ تَكۡرَهُوۡا شَيۡـًٔا وَّيَجۡعَلَ اللّٰهُ فِيۡهِ خَيۡرًا كَثِيۡرًا
১৯.) হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য জোরপূর্বক নারীদের উত্তরাধিকারী হয়ে বসা
মোটেই হালাল নয়। আর তোমরা যে মোহরানা তাদেরকে দিয়েছো তার কিছু অংশ তাদেরকে
কষ্ট দিয়ে আত্মসাৎ করাও তোমাদের জন্য হালাল নয়। তবে তারা যদি কোন সুস্পষ্ট
চরত্রহীনতার কাজে লিপ্ত হয় (তাহলে অবশ্যি তোমরা তাদেরকে কষ্ট দেবার অধিকারী
হবে) তাদের সাথে সদ্ভাবে জীবন যাপন করো। যদি তারা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়
হয়, তাহলে হতে পারে একটা জিনিস তোমরা পছন্দ করো না কিন্তু আল্লাহ তার
মধ্যে অনেক কল্যাণ রেখেছেন।
وَاِنۡ اَرَدتُّمُ اسۡتِبۡدَالَ زَوۡجٍ مَّكَانَ زَوۡجٍۙ وَّاٰتَيۡتُمۡ
اِحۡدٰٮهُنَّ قِنۡطَارًا فَلَا تَاۡخُذُوۡا مِنۡهُ شَيۡـًٔاؕ
اَتَاۡخُذُوۡنَهٗ بُهۡتَانًا وَّاِثۡمًا مُّبِيۡنًا
২০.) আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর জায়গায় অন্য স্ত্রী আনার সংকল্প করেই থাকো,
তাহলে তোমরা তাকে স্তুপীকৃত সম্পদ দিয়ে থাকলেও তা থেকে কিছুই ফিরিয়ে নিয়ো
না। তোমরা কি মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ও সুস্পষ্ট জুলুম করে তা ফিরিয়ে নেবে?
وَكَيۡفَ تَاۡخُذُوۡنَهٗ وَقَدۡ اَفۡضَىٰ بَعۡضُكُمۡ اِلٰى بَعۡضٍ وَّاَخَذۡنَ مِنۡكُمۡ مِّيۡثَاقًا غَلِيۡظًا
২১.) আর তোমরা তা নেবেই বা কেমন করে যখন তোমরা পরস্পরের স্বাদ গ্রহণ করেছো এবং তারা তোমাদের কাছ থেকে পাকাপোক্ত অঙ্গীকার নিয়েছে।
وَلَا تَنۡكِحُوۡا مَا نَكَحَ اٰبَآؤُكُمۡ مِّنَ النِّسَآءِ اِلَّا مَا
قَدۡ سَلَفَؕ اِنَّهٗ كَانَ فَاحِشَةً وَّمَقۡتًاؕ وَسَآءَ سَبِيۡلاً
২২.) আর তোমাদের পিতা যেসব স্ত্রীলোককে বিয়ে করেছে, তাদেরকে কোনোক্রমেই
বিয়ে করো না। তবে আগে যা হয়ে গেছে তা হয়ে গেছে। আসলে এটা একটা
নির্লজ্জতাপ্রসূত কাজ, অপছন্দনীয় ও নিকৃষ্ট আচরণ।
حُرِّمَتۡ عَلَيۡكُمۡ اُمَّهٰتُكُمۡ وَبَنٰتُكُمۡ وَاَخَوٰتُكُمۡ
وَعَمّٰتُكُمۡ وَخٰلٰتُكُمۡ وَبَنٰتُ الۡاٰخِ وَبَنَاتُ الۡاُخۡتِ
وَاُمَّهٰتُكُمُ الّٰتِىۡۤ اَرۡضَعۡنَكُمۡ وَاَخَوٰتُكُمۡ مِّنَ
الرَّضٰعَةِ وَاُمَّهٰتُ نِسَآٮِٕكُمۡ وَرَبٰٓٮِٕبُكُمُ الّٰتِىۡ فِىۡ
حُجُوۡرِكُمۡ مِّنۡ نِّسَآٮِٕكُمُ الّٰتِىۡ دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ فَاِنۡ
لَّمۡ تَكُوۡنُوۡا دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ
وَحَلَٓاٮِٕلُ اَبۡنَآٮِٕكُمُ الَّذِيۡنَ مِنۡ اَصۡلٰبِكُمۡۙ وَاَنۡ
تَجۡمَعُوۡا بَيۡنَ الۡاُخۡتَيۡنِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَؕ اِنَّ اللّٰهَ
كَانَ غَفُوۡرًا رَّحِيۡمًاۙ
২৩.) তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা, কন্যা, বোন, ফুফু, খালা,
ভাতিজি, ভাগিনী ও তোমাদের সেই সমস্ত মাকে যারা তোমাদেরকে দুধ পান করিয়েছে
এবং তোমাদের দুধ বোন তোমাদের স্ত্রীদের মা ও তোমাদের স্ত্রীদের মেয়েদেরকে
যারা তোমাদের কোলে মানুষ হয়েছে, -সেই সমস্ত স্ত্রীদের মেয়েদেরকে যাদের
সাথে তোমাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, অন্যথায় যদি
(শুধুমাত্র বিয়ে হয় এবং) স্বামী -স্ত্রীর সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে
(তাদেরকে বাদ দিয়ে তাদের মেয়েদেরকে বিয়ে করলে) তোমাদের কোন জবাবদিহি করতে
হবে না,-এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদেরকেও। আর দুই বোনকে একসাথে
বিয়ে করাও তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে। তবে যা প্রথমে হয়ে গেছে তা হয়ে
গেছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
وَّالۡمُحۡصَنٰتُ مِنَ النِّسَآءِ اِلَّا مَا مَلَكَتۡ اَيۡمَانُكُمۡۚ
كِتٰبَ اللّٰهِ عَلَيۡكُمۡؕ وَاُحِلَّ لَكُمۡ مَّا وَرَآءَ ذٰلِكُمۡ اَنۡ
تَبۡتَغُوۡا بِاَمۡوَالِكُمۡ مُّحۡصِنِيۡنَ غَيۡرَ مُسَافِحِيۡنَؕ فَمَا
اسۡتَمۡتَعۡتُمۡ بِهٖ مِنۡهُنَّ فَاٰتُوۡهُنَّ اُجُوۡرَهُنَّ فَرِيۡضَةًؕ
وَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ فِيۡمَا تَرٰضَيۡتُمۡ بِهٖ مِنۡۢ بَعۡدِ
الۡفَرِيۡضَةِؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلِيۡمًا حَكِيۡمًا
২৪.) আর (যুদ্ধের মাধ্যমে) তোমাদের অধিকারভুক্ত হয়েছে এমন সব মেয়ে ছাড়া
বাকি সমস্ত সধবাই তোমাদের জন্য হারাম। এ হচ্ছে আল্লাহর আইন। এ আইন মেনে চলা
তোমাদের জন্য অপরিহার্য গণ্য করা হয়েছে। এদের ছাড়া বাদ বাকি সমস্ত মহিলাকে
অর্থ-সম্পদের মাধ্যমে লাভ করা তোমাদের জন্য হালাল গণ্য করা হয়েছে। তবে
শর্ত হচ্ছে এই যে, তাদেরকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে হবে, অবাধ যৌন লালসা
তৃপ্ত করতে পারবে না। তারপর যে দাম্পত্য জীবনের স্বাদ তোমরা তাদের মাধ্যমে
গ্রহণ করো, তার বদলে তাদের মোহরানা ফরয হিসেবে আদায় করো। তবে মোহরানার
চুক্তি হয়ে যাবার পর পারস্পরিক রেজামন্দির মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে যদি কোন
সমঝোতা হয়ে যায় তাহলে তাতে কোন ক্ষতি নেই। আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও জ্ঞানী।
وَمَنۡ لَّمۡ يَسۡتَطِعۡ مِنۡكُمۡ طَوۡلاً اَنۡ يَّنۡكِحَ الۡمُحۡصَنٰتِ
الۡمُؤۡمِنٰتِ فَمِنۡ مَّا مَلَكَتۡ اَيۡمَانُكُمۡ مِّنۡ فَتَيٰتِكُمُ
الۡمُؤۡمِنٰتِؕ وَاللّٰهُ اَعۡلَمُ بِاِيۡمَانِكُمۡؕ بَعۡضُكُمۡ مِّنۡۢ
بَعۡضٍۚ فَانكِحُوۡهُنَّ بِاِذۡنِ اَهۡلِهِنَّ وَاٰتُوۡهُنَّ
اُجُوۡرَهُنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ مُحۡصَنٰتٍ غَيۡرَ مُسٰفِحٰتٍ وَّلَا
مُتَّخِذٰتِ اَخۡدَانٍؕ فَاِذَاۤ اُحۡصِنَّ فَاِنۡ اَتَيۡنَ بِفَاحِشَةٍ
فَعَلَيۡهِنَّ نِصۡفُ مَا عَلَى الۡمُحۡصَنٰتِ مِنَ الۡعَذَابِؕ ذٰلِكَ
لِمَنۡ خَشِىَ الۡعَنَتَ مِنۡكُمۡؕ وَاَنۡ تَصۡبِرُوۡا خَيۡرٌ لَّكُمۡؕ
وَاللّٰهُ غَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ
২৫.) আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তির সম্ভ্রান্ত পরিবারের মুসলিম মেয়েদের
বিয়ে করার সামর্থ নেই তার তোমাদের অধিকারভুক্ত মুমিন দাসীদের মধ্য থেকে
কাউকে বিয়ে করে নেয়া উচিত। আল্লাহ তোমাদের ঈমানের অবস্থা খুব ভালোভাবেই
জানেন। তোমরা সবাই একই দলের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই তাদের অভিভাবকদের
অনুমতিক্রমে তাদেরকে বিয়ে করো এবং প্রচলিত তাদের মোহরানা আদায় করো, যাতে
তারা বিয়ের আবেষ্টনীর মধ্যে সংরক্ষিত থাকে, অবাধ যৌন লালসা পরিতৃপ্ত করতে
উদ্যোগী না হয় এবং লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম না করে বেড়াই। তারপর যখন তারা বিয়ের
আবেষ্টনীর মধ্যে সংরক্ষিত হয়ে যায় এবং এরপর কোন ব্যভিচার করে তখন তাদের
জন্য সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়েদের জন্য নির্ধারিত শাস্তির অর্ধেক শাস্তি
দিতে হবে। তোমাদের মধ্য থেকে সেইসব লোকের জন্য এ সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছে,
যাদের বিয়ে না করলে তাকওয়া বাঁধ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তবে সবর করলে তা
তোমাদের জন্য ভালো। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
يُرِيۡدُ اللّٰهُ لِيُبَيِّنَ لَكُمۡ وَيَهۡدِيَكُمۡ سُنَنَ الَّذِيۡنَ
مِنۡ قَبۡلِكُمۡ وَيَتُوۡبَ عَلَيۡكُمۡؕ وَاللّٰهُ عَلِيۡمٌ حَكِيۡمٌ
২৬.) তোমাদের আগে যেসব সৎলোক চলে গেছে, তারা যেসব পদ্ধতির অনুসরণ করতো,
আল্লাহ তোমাদের সামনে সেই পদ্ধতিগুলো সুস্পষ্ট করে দিতে এবং সেই সব
পদ্ধতিতে তোমাদের চালাতে চান। তিনি নিজের রহমত সহকারে তোমাদের প্রতি
দৃষ্টিপাত করতে চান। আর তিনি সর্বজ্ঞ ও জ্ঞানময়।
وَاللّٰهُ يُرِيۡدُ اَنۡ يَّتُوۡبَ عَلَيۡكُمۡ وَيُرِيۡدُ الَّذِيۡنَ
يَتَّبِعُوۡنَ الشَّهٰوتِ اَنۡ تَمِيۡلُوۡا مَيۡلاً عَظِيۡمًا
২৭.) হ্যাঁ, আল্লাহ তো রহমত সহকারে তোমাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে চান।
কিন্তু যারা নিজেদের প্রবৃত্তির লালসার অনুসরণ করছে তারা চায় তোমরা ন্যায় ও
সত্যের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে দূরে চলে যাও।
يُرِيۡدُ اللّٰهُ اَنۡ يُّخَفِّفَ عَنۡكُمۡۚ وَخُلِقَ الۡاِنۡسَانُ ضَعِيۡفًا
২৮.) আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে বিধি-নিষেধ হাল্কা করতে চান। কারণ মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡكُلُوۡۤا اَمۡوٰلَكُمۡ
بَيۡنَكُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَكُوۡنَ تِجٰرَةً عَنۡ تَرَاضٍ
مِّنۡكُمۡ وَلَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَكُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِكُمۡ
رَحِيۡمًا
২৯.) হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ে ফেলো না।
লেনদেন হতে হবে পারস্পরিক রেজামন্দির ভিত্তিতে। আর নিজেকে হত্যা করো না।
নিশ্চিত জানো, আল্লাহ তোমাদের প্রতি মেহেরবান।
وَمَنۡ يَّفۡعَلۡ ذٰلِكَ عُدۡوَانًا وَّظُلۡمًا فَسَوۡفَ نُصۡلِيۡهِ نَارًاؕ وَكَانَ ذٰلِكَ عَلَى اللّٰهِ يَسِيۡرًا
৩০.) যে ব্যক্তি জুলুম ও অন্যায় বাড়াবাড়ি করে এমনটি করবে তাকে আমি অবশ্যি আগুনে নিক্ষেপ করবো। আর আল্লাহর জন্য এটা কোন কঠিন কাজ নয়।
اِنۡ تَجۡتَنِبُوۡا كَبَآٮِٕرَ مَا تُنۡهَوۡنَ عَنۡهُ نُكَفِّرۡ عَنۡكُمۡ سَيِّاٰتِكُمۡ وَنُدۡخِلۡكُمۡ مُّدۡخَلاً كَرِيۡمًا
৩১.) তোমরা যদি বড় বড় গোনাহ থেকে দূরে থাকো, যা থেকে দূরে থাকার জন্য
তোমাদের বলা হচ্ছে, তাহলে তোমাদের ছোট-খাটো খারাপ কাজগুলো আমি তোমাদের
হিসেব থেকে বাদ দিয়ে দেবো এবং তোমাদের সম্মান ও মর্যাদার জায়গায় প্রবেশ
করিয়ে দেবো।
وَلَا تَتَمَنَّوۡا مَا فَضَّلَ اللّٰهُ بِهٖ بَعۡضَكُمۡ عَلٰى بَعۡضٍؕ
لِّلرِّجَالِ نَصِيۡبٌ مِّمَّا اكۡتَسَبُوۡاؕ وَلِلنِّسَآءِ نَصِيۡبٌ
مِّمَّا اكۡتَسَبۡنَؕ وَسۡـَٔلُوۡا اللّٰهَ مِنۡ فَضۡلِهٖۤؕ اِنَّ
اللّٰهَ كَانَ بِكُلِّ شَىۡءٍ عَلِيۡمًا
৩২.) আর যা কিছু আল্লাহ তোমাদের কাউকে অন্যদের মোকাবিলায় বেশী দিয়েছেন তার
আকাংখা করো না। যা কিছু পুরুষেরা উপার্জন করেছে তাদের অংশ হবে সেই
অনুযায়ী। আর যা কিছু মেয়েরা উপার্জন করেছে তাদের অংশ হবে সেই অনুযায়ী।
হ্যাঁ,, আল্লাহর কাছে তাঁর ফযল ও মেহেরবানীর জন্য দোয়া করতে থাকো।
নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ সমস্ত জিনিসের জ্ঞান রাখেন।
وَلِكُلٍّ جَعَلۡنَا مَوَالِىَ مِمَّا تَرَكَ الۡوَالِدٰنِ
وَالۡاَقۡرَبُوۡنَؕ وَالَّذِيۡنَ عَقَدَتۡ اَيۡمَانُكُمۡ فَاٰتُوۡهُمۡ
نَصِيۡبَهُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ شَهِيۡدًا
৩৩.) আর বাপ-মা ও আত্মীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত ধন-সম্পত্তিতে আমি তাদের হকদার
নির্ধারিত করে দিয়েছি। এখন থাকে তারা, যাদের সাথে তোমাদের চুক্তি ও
অঙ্গীকার আছে, তাদের অংশ তাদেরকে দিয়ে দাও। নিশ্চিত জেনে রাখো আল্লাহ সব
জিনিসের রক্ষণাবেক্ষণকারী।
الرِّجَالُ قَوّٰمُوۡنَ عَلَى النِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ اللّٰهُ
بَعۡضَهُمۡ عَلٰى بَعۡضٍ وَّبِمَاۤ اَنۡفَقُوۡا مِنۡ اَمۡوَالِهِمۡؕ
فَالصّٰلِحٰتُ قٰنِتٰتٌ حٰفِظٰتٌ لِّلۡغَيۡبِ بِمَا حَفِظَ اللّٰهُؕ
وَالّٰتِىۡ تَخَافُوۡنَ نُشُوۡزَهُنَّ فَعِظُوۡهُنَّ وَاهۡجُرُوۡهُنَّ فِىۡ
الۡمَضَاجِعِ وَاضۡرِبُوۡهُنَّۚ فَاِنۡ اَطَعۡنَكُمۡ فَلَا تَبۡغُوۡا
عَلَيۡهِنَّ سَبِيۡلاً ؕاِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلِيًّا كَبِيۡرًا
৩৪.) পুরুষ নারীর কর্তা। এ জন্য যে, আল্লাহ তাদের একজনকে অন্য জনের ওপর
শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং এ জন্য যে, পুরুষ নিজের ধন-সম্পদ ব্যয় করে।
কাজেই সতী-সাধ্বী স্ত্রীরা আনুগত্যপরায়ণ হয় এবং পুরুষদের অনুপস্থিতিতে
আল্লাহর হেফাজত ও তত্বাবধানে তাদের অধিকার সংরক্ষণ করে থাকে। আর যেসব
স্ত্রীর ব্যাপারে তোমরা অবাধ্যতার আশঙ্কা করো, তাদেরকে বুঝাও, শয়নগৃহে
তাদের থেকে আলাদা থাকো এবং তাদেরকে মারধোর করো। তারপর যদি তারা তোমাদের
অনুগত হয়ে যায় তাহলে অযথা তাদের ওপর নির্যাতন চালাবার জন্য বাহানা তালাশ
করো না। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ ওপরে আছেন, তিনি বড় ও শ্রেষ্ঠ।
وَاِنۡ خِفۡتُمۡ شِقَاقَ بَيۡنِهِمَا فَابۡعَثُوۡا حَكَمًا مِّنۡ اَهۡلِهٖ
وَحَكَمًا مِّنۡ اَهۡلِهَاۚ اِنۡ يُّرِيۡدَاۤ اِصۡلٰحًا يُّوَفِّقِ
اللّٰهُ بَيۡنَهُمَاؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلِيۡمًا خَبِيۡرًا
৩৫.) আর যদি কোথাও তোমাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বিগড়ে যাবার আশঙ্কা দেখা
দেয় তাহলে পুরুষের আত্মীয়দের মধ্য থেকে একজন সালিশ এবং স্ত্রীর আত্মীয়দের
মধ্য থেকে একজন সালিশ নির্ধারণ করে দাও। তারা দু’জন সংশোধন করে নিতে চাইলে
আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসা ও মিলমিশের পরিবেশ সৃষ্টি করে দেবেন। আল্লাহ
সবকিছু জানেন, তিনি সর্বজ্ঞ।
وَاعۡبُدُوۡا اللّٰهَ وَلَا تُشۡرِكُوۡا بِهٖ شَيۡـًٔاؕ
وَّبِالۡوَالِدَيۡنِ اِحۡسٰنًا وَّبِذِىۡ الۡقُرۡبٰى وَالۡيَتٰمٰى
وَالۡمَسٰكِيۡنِ وَالۡجَارِ ذِىۡ الۡقُرۡبٰى وَالۡجَارِ الۡجُنُبِ
وَالصَّاحِبِ بِالۡجَنۡۢبِ وَابۡنِ السَّبِيۡلِۙ وَمَا مَلَكَتۡ
اَيۡمَانُكُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا يُحِبُّ مَنۡ كَانَ مُخۡتَالاً
فَخُوۡرًا
৩৬.) আর তোমরা সবাই আল্লাহর বন্দেগী করো। তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না।
বাপ-মার সাথে ভালো ব্যবহার করো। নিকট আত্মীয় ও এতিম-মিসকিনদের সাথে
সদ্ব্যবহার করো। আত্মীয় প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পার্শ্বসাথী,
মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাধীন বাদী ও গোলামদের প্রতি সদয় ব্যবহার করো।
নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ এমন কোন ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না যে
আত্মঅহংকারে ধরাকে সরা জ্ঞান করে এবং নিজের বড়াই করে।
اۨلَّذِيۡنَ يَبۡخَلُوۡنَ وَيَاۡمُرُوۡنَ النَّاسَ بِالۡبُخۡلِ
وَيَكۡتُمُوۡنَ مَاۤ اٰتٰٮهُمُ اللّٰهُ مِنۡ فَضۡلِهٖؕ وَاَعۡتَدۡنَا
لِلۡكٰفِرِيۡنَ عَذَابًا مُّهِيۡنًاۚ
৩৭.) আর আল্লাহ এমন লোকদেরকেও পছন্দ করেন না, যারা কৃপণতা করে, অন্যদেরকেও
কৃপণতা করার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা কিছু
দিয়েছেন সেগুলো গোপন করে। এই ধরনের অনুগ্রহ অস্বীকারকারী লোকদের জন্য আমি
লাঞ্ছনাপূর্ণ শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছি।
وَالَّذِيۡنَ يُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَهُمۡ رِئَآءَ النَّاسِ وَلَا
يُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰهِ وَلَا بِالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِؕ وَمَنۡ يَّكُنِ
الشَّيۡطٰنُ لَهٗ قَرِيۡنًا فَسَآءَ قَرِيۡنًا
৩৮.) আর আল্লাহ তাদেরকেও অপছন্দ করেন, যারা নিজেদের ধন-সম্পদ কেবল মাত্র
লোকদেরকে দেখাবার জন্য ব্যয় করে এবং আসলে না আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে আর না
আখেরাতের দিনের প্রতি। সত্য বলতে কি, শয়তান যার সাথী হয়েছে তার ভাগ্যে বড়
খারাপ সাথীই জুটেছে।
وَمَاذَا عَلَيۡهِمۡ لَوۡ اٰمَنُوۡا بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ
وَاَنۡفَقُوۡا مِمَّا رَزَقَهُمُ اللّٰهُؕ وَكَانَ اللّٰهُ بِهِمۡ
عَلِيۡمًا
৩৯.) হ্যাঁ, যদি তারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনতো এবং যা কিছু
আল্লাহ তাদেরকে দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করতো, তাহলে তাদের মাথায় এমন কী আকাশ
ভেঙে পড়তো? যদি তারা এমনটি করতো, তাহলে তাদের নেকীর অবস্থা আল্লাহর কাছে
গোপন থেকে যেতো না।
اِنَّ اللّٰهَ لَا يَظۡلِمُ مِثۡقَالَ ذَرَّةٍ ۚ وَّاِنۡ تَكُ حَسَنَةً يُّضٰعِفۡهَا وَيُؤۡتِ مِنۡ لَّدُنۡهُ اَجۡرًا عَظِيۡمًا
৪০.) আল্লাহ কারো ওপর এক অণু পরিমাণও জুলুম করেন না। যদি কেউ একটি সৎকাজ
করে, তাহলে আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং নিজের পক্ষ থেকে তাকে
মহাপুরস্কার প্রদান করেন।
فَكَيۡفَ اِذَا جِئۡنَا مِنۡ كُلِّ اُمَّةٍۭ بِشَهِيۡدٍ وَّجِئۡنَا بِكَ عَلٰى هٰٓؤُلَآءِ شَهِيۡدًاؕ
৪১.) তারপর চিন্তা করো, তখন তারা কি করবে যখন আমি প্রত্যেক উম্মাত থেকে
একজন সাক্ষী আনবো এবং তাদের ওপর তোমাকে (অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) সাক্ষী হিসেবে দাঁড় করাবো
يَوۡمَٮِٕذٍ يَّوَدُّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا وَعَصَوُا الرَّسُوۡلَ لَوۡ
تُسَوّٰى بِهِمُ الۡاَرۡضُؕ وَلَا يَكۡتُمُوۡنَ اللّٰهَ حَدِيۡثًا
৪২.) সে সময় যারা রসূলের কথা মানেনি এবং তাঁর নাফরমানি করতে থেকেছে তারা
কামনা করবে, হায়! যমীন যদি ফেটে যেতো এবং তারা তার মধ্যে চলে যেতো। সেখানে
তারা আল্লাহর কাছ থেকে নিজেদের কোন কথা লুকিয়ে রাখতে পারবে না।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَقۡرَبُوا الصَّلٰوةَ وَاَنۡتُمۡ
سُكَارٰى حَتّٰى تَعۡلَمُوۡا مَا تَقُوۡلُوۡنَ وَلَا جُنُبًا اِلَّا
عَابِرِىۡ سَبِيۡلٍ حَتّٰى تَغۡتَسِلُوۡاؕ وَاِنۡ كُنۡتُمۡ مَّرۡضَىٰۤ
اَوۡ عَلٰى سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡكُمۡ مِّنَ الۡغَآٮِٕطِ اَوۡ
لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَيَمَّمُوۡا صَعِيۡدًا
طَيِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡهِكُمۡ وَاَيۡدِيۡكُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ
كَانَ عَفُوًّا غَفُوۡرًا
৪৩.) হে ঈমানদারগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের কাছে যেয়ো না। নামায
সেই সময় পড়া উচিত যখন তোমরা যা বলছো তা জানতে পারো। অনুরূপভাবে অপবিত্র
অবস্থায়ও গোসল না করা পর্যন্ত নামাযের কাছে যেয়ো না। তবে যদি পথ
অতিক্রমকারী হও, তাহলে অবশ্যি স্বতন্ত্র কথা। আর যদি কখনো তোমরা অসুস্থ হয়ে
পড়ো, সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ মলমূত্র ত্যাগ করে আসে অথবা তোমরা নারী
সম্ভোগ করে থাকো এবং এরপর পানি না পাও, তাহলে পাক–পবিত্র মাটির সাহায্য
গ্রহণ করো এবং তা নিজেদের চেহারা ও হাতের ওপর বুলাও। নিঃসন্দেহে আল্লাহ
কোমলতা অবলম্বনকারী ও ক্ষমাশীল।
اَلَمۡ تَرَ اِلَى الَّذِيۡنَ اُوۡتُوۡا نَصِيۡبًا مِّنَ الۡكِتٰبِ
يَشۡتَرُوۡنَ الضَّلٰلَةَ وَيُرِيۡدُوۡنَ اَنۡ تَضِلُّوۡا السَّبِيۡلَؕ
৪৪.) তুমি কি তাদেরকেও দেখেছো, যাদেরকে কিতাবের জ্ঞানের কিছু অংশ দেয়া
হয়েছে? তারা নিজেরাই গোমরাহীর খরিদ্দার বনে গেছে এবং কামনা করছে যেন তোমরাও
পথ ভুল করে বসো।
وَاللّٰهُ اَعۡلَمُ بِاَعۡدَآٮِٕكُمۡؕ وَكَفٰى بِاللّٰهِ وَلِيًّا وَّكَفٰى بِاللّٰهِ نَصِيۡرًا
৪৫.) আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের ভালো করেই জানেন এবং তোমাদের সাহায্য-সমর্থনের জন্য আল্লাহ-ই যথেষ্ট।
مِّنَ الَّذِيۡنَ هَادُوۡا يُحَرِّفُوۡنَ الۡكَلِمَ عَنۡ مَّوَاضِعِهٖ
وَيَقُوۡلُوۡنَ سَمِعۡنَا وَعَصَيۡنَا وَاسۡمَعۡ غَيۡرَ مُسۡمَعٍ
وَّرَاعِنَا لَيًّۢا بِاَلۡسِنَتِهِمۡ وَطَعۡنًا فِىۡ الدِّيۡنِؕ وَلَوۡ
اَنَّهُمۡ قَالُوۡا سَمِعۡنَا وَاَطَعۡنَا وَاسۡمَعۡ وَانظُرۡنَا لَكَانَ
خَيۡرًا لَّهُمۡ وَاَقۡوَمَۙ وَلٰكِنۡ لَّعَنَهُمُ اللّٰهُ بِكُفۡرِهِمۡ
فَلَا يُؤۡمِنُوۡنَ اِلَّا قَلِيۡلاً
৪৬.) যারা ইহুদী হয়ে গেছে, তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা শব্দকে তার
স্থান থেকে ফিরিয়ে দেয় এবং সত্য দ্বীনের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ প্রকাশের জন্য
নিজেদের জিহ্বা কুঞ্চিত করে বলে, “আমরা শুনলাম” এবং “আমরা অমান্য করলাম” আর
“শোনে না শোনার মতো” এবং বলে “রাঈনা।” অথচ তারা যদি বলতো, “আমরা শুনলাম ও
মেনে নিলাম” এবং “শোন” ও “আমাদের প্রতি লক্ষ্য করো” তাহলে এটা তাদেরই জন্য
ভালো হতো এবং এটাই হতো অধিকতর সততার পরিচায়ক। কিন্তু তাদের বাতিল পরস্তির
কারণে তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ পড়েছে। তাই তারা খুব কমই ঈমান এনে থাকে।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اُوۡتُوۡا الۡكِتٰبَ اٰمِنُوۡا بِمَا نَزَّلۡنَا
مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَكُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ نَّطۡمِسَ وُجُوۡهًا
فَنَرُدَّهَا عَلٰٓى اَدۡبَارِهَاۤ اَوۡ نَلۡعَنَهُمۡ كَمَا لَعَنَّاۤ
اَصۡحٰبَ السَّبۡتِؕ وَكَانَ اَمۡرُ اللّٰهِ مَفۡعُوۡلاً
৪৭.) হে কিতাবধারীগণ! সেই কিতাবটি মেনে নাও যেটি আমি এখন নাযিল করেছি এবং
যেটি তোমাদের কাছে আগে থেকে মজুদ কিতাবের সত্যতা প্রমাণ করে ও তার প্রতি
সমর্থন জানায়। আর আমি চেহারা বিকৃত করে পেছন দিকে ফিরিয়ে দেবার অথবা
শনিবার-ওয়ালাদের মতো তাদেরকে অভিশপ্ত করার আগে এর প্রতি ঈমান আনো। আর মনে
রাখো, আল্লাহর নির্দেশ প্রতিপালিত হয়েই থাকে।
اِنَّ اللّٰهَ لَا يَغۡفِرُ اَنۡ يُّشۡرَكَ بِهٖ وَيَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ
ذٰلِكَ لِمَنۡ يَّشَآءُۚ وَمَنۡ يُّشۡرِكۡ بِاللّٰهِ فَقَدِ افۡتَرٰۤى
اِثۡمًا عَظِيۡمًا
৪৮.) আল্লাহ অবশ্যই শিরককে মাফ করেন না। এছাড়া অন্যান্য যত গোনাহর হোক না
কেন তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে আর কাউকে শরীক
করেছে সেতো এক বিরাট মিথ্যা রচনা করেছে এবং কঠিন গোনাহের কাজ করেছে।
اَلَمۡ تَرَ اِلَى الَّذِيۡنَ يُزَكُّوۡنَ اَنۡفُسَهُمۡؕ بَلِ اللّٰهُ يُزَكِّىۡ مَنۡ يَّشَآءُ وَلَا يُظۡلَمُوۡنَ فَتِيۡلاً
৪৯.) তুমি কি তাদেরকেও দেখেছো, যারা নিজেদের আত্মশুদ্ধি ও আত্মপবিত্রতার
বড়াই করে বেড়ায়? অথচ শুদ্ধি ও পবিত্রতা আল্লাহ যাকে চান তাকে দেন। আর
(তারা যে শুদ্ধি ও পবিত্রতা লাভ করে না সেটা আসলে) তাদের ওপর বিন্দুমাত্রও
জুলুম করা হয় না।
اُنْظُرۡ كَيۡفَ يَفۡتَرُوۡنَ عَلَى اللّٰهِ الۡكَذِبَؕ وَكَفٰى بِهٖۤ اِثۡمًا مُّبِيۡنًا
৫০.) আচ্ছা, দেখো তো, এর আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা রচনা করতে একটুও কুন্ঠিত
হয় না। এদের স্পষ্ট গোনাহগার হবার ব্যাপারে এই একটি গোনাহই যথেষ্ট।
اَلَمۡ تَرَ اِلَى الَّذِيۡنَ اُوۡتُوۡا نَصِيۡبًا مِّنَ الۡكِتٰبِ
يُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡجِبۡتِ وَالطَّاغُوۡتِ وَيَقُوۡلُوۡنَ لِلَّذِيۡنَ
كَفَرُوۡا هٰٓؤُلَآءِ اَهۡدٰى مِنَ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا سَبِيۡلاً
৫১.) তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যাদেরকে কিতাবের জ্ঞান থেকে কিছু অংশ দেয়া
হয়েছে এবং তাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা জিব্ত ও তাগুতকে মানে আর
কাফেরদের সম্পর্কে বলে, ঈমানদারদের তুলনায় এরাই তো অধিকতর নির্ভুল পথে
চলেছে?
اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ لَعَنَهُمُ اللّٰهُؕ وَمَنۡ يَّلۡعَنِ اللّٰهُ فَلَنۡ تَجِدَ لَهٗ نَصِيۡرًاؕ
৫২.) এই ধরনের লোকদের ওপর আল্লাহ লানত বর্ষণ করেছেন। আর যার ওপর আল্লাহ লানত বর্ষণ করেন তোমরা তার কোন সাহায্যকারী পাবে না।
اَمۡ لَهُمۡ نَصِيۡبٌ مِّنَ الۡمُلۡكِ فَاِذًا لَّا يُؤۡتُوۡنَ النَّاسَ نَقِيۡرًاۙ
৫৩.) রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের কোন অংশ আছে কি? যদি তাই হতো, তাহলে তারা অন্যদেরকে একটি কানাকড়িও দিতো না।
اَمۡ يَحۡسُدُوۡنَ النَّاسَ عَلٰى مَاۤ اٰتٰٮهُمُ اللّٰهُ مِنۡ فَضۡلِهٖۚ
فَقَدۡ اٰتَيۡنَاۤ اٰلَ اِبۡرٰهِيۡمَ الۡكِتٰبَ وَالۡحِكۡمَةَ
وَاٰتَيۡنٰهُمۡ مُّلۡكًا عَظِيۡمًا
৫৪.) তাহলে কি অন্যদের প্রতি তারা এ জন্য হিংসা করেছে যে, আল্লাহ তাদেরকে
নিজের অনুগ্রহ দানে সমৃদ্ধ করেছেন। যদি এ কথাই হয়ে থাকে, তাহলে তাদের জেনে
রাখা দরকার, আমি ইবরাহীমের সন্তানদেরকে কিতাব ও হিকমত দান করেছি এবং
তাদেরকে দান করেছি বিরাট রাজত্ব।
فَمِنۡهُمۡ مَّنۡ اٰمَنَ بِهٖ وَمِنۡهُمۡ مَّنۡ صَدَّ عَنۡهُؕ وَكَفٰى بِجَهَنَّمَ سَعِيۡرًا
৫৫.) কিন্তু তাদের মধ্য থেকে কেউ এর ওপর ঈমান এনেছে আবার কেউ এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
اِنَّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا بِاٰيٰتِنَا سَوۡفَ نُصۡلِيۡهِمۡ نَارًاؕ
كُلَّمَا نَضِجَتۡ جُلُوۡدُهُمۡ بَدَّلۡنٰهُمۡ جُلُوۡدًا غَيۡرَهَا
لِيَذُوۡقُوۡا الۡعَذَابَؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَزِيۡزًا حَكِيۡمًا
৫৬.) আর যারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তাদের জন্য তো জাহান্নামের প্রজ্জ্বলিত
আগুনই যথেষ্ট। যারা আমার আয়াতগুলো মেনে নিতে অস্বীকার করেছে তাদেরকে আমি
নিশ্চিতভাবেই আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করবো। আর যখন তাদের চামড়া পুড়ে গলে যাবে
তখন তার জায়গায় আমি অন্য চামড়া তৈরী করে দেবো, যাতে তারা খুব ভালোভাবে
আযাবের স্বাদ গ্রহণ করতে পারে। আল্লাহ বিপুল ক্ষমতার অধিকারী এবং তিনি
নিজের ফায়সালাগুলো বাস্তবায়নের কৌশল খুব ভালোভাবেই জানেন।
وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوۡا الصّٰلِحٰتِ سَنُدۡخِلُهُمۡ جَنّٰتٍ
تَجۡرِىۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَاۤ اَبَدًاؕ
لَّهُمۡ فِيۡهَاۤ اَزۡوٰجٌ مُّطَهَّرَةٌ وَّنُدۡخِلُهُمۡ ظِلاًّ
ظَلِيۡلاً
৫৭.) আর যারা আমার আয়াতগুলো মেনে নিয়েছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে এমন সব
বাগীচার মধ্যে প্রবেশ করাবো যার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে। সেখানে
তারা থাকবে, চিরস্থায়ীভাবে, তারা সেখানে পবিত্র স্ত্রীদেরকে লাভ করবে এবং
তাদেরকে আমি আশ্রয় দেবো ঘন স্নিগ্ধ ছায়াতলে।
اِنَّ اللّٰهَ يَاۡمُرُكُمۡ اَنۡ تُؤَدُّوۡا الۡاَمٰنٰتِ اِلٰٓى
اَهۡلِهَاۙ وَاِذَا حَكَمۡتُمۡ بَيۡنَ النَّاسِ اَنۡ تَحۡكُمُوۡا
بِالۡعَدۡلِؕ اِنَّ اللّٰهَ نِعِمَّا يَعِظُكُمۡ بِهٖؕ اِنَّ اللّٰهَ
كَانَ سَمِيۡعَۢا بَصِيۡرًا
৫৮.) হে মুসলিমগণ! আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় আমানত তার হকদারদের হাতে ফেরত
দেবার নির্দেশ দিচ্ছেন। আর লোকদের মধ্যে ফায়সালা করার সময় “আদল” ও
ন্যায়নীতি সহকারে ফায়সালা করো। আল্লাহ্ তোমাদের বড়ই উৎকৃষ্ট উপদেশ দান
করেন। আর অবশ্যই আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও দেখেন।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِيۡعُوۡا اللّٰهَ وَاَطِيۡعُوۡا
الرَّسُوۡلَ وَاُولِىۡ الۡاَمۡرِ مِنۡكُمۡۚ فَاِنۡ تَنَازَعۡتُمۡ فِىۡ
شَىۡءٍ فَرُدُّوۡهُ اِلَى اللّٰهِ وَالرَّسُوۡلِ اِنۡ كُنۡتُمۡ
تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِؕ ذٰلِكَ خَيۡرٌ وَّاَحۡسَنُ
تَاۡوِيۡلاً
৫৯.) হে ঈমানদারগণ! আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো রসূলের আর সেই সব
লোকের যারা তোমাদের মধ্যে দায়িত্ব ও ক্ষমতার অধিকারী। এরপর যদি তোমাদের
মধ্যে কোন ব্যাপারে বিরোধ দেখা দেয় তাহলে তাকে আল্লাহ ও রসূলের দিকে
ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহ ও পরকালের ওপর ঈমান এনে থাকো। এটিই
একটি সঠিক কর্মপদ্ধতি এবং পরিণতির দিক দিয়েও এটিই উৎকৃষ্ট।
اَلَمۡ تَرَ اِلَى الَّذِيۡنَ يَزۡعُمُوۡنَ اَنَّهُمۡ اٰمَنُوۡا بِمَاۤ
اُنۡزِلَ اِلَيۡكَ وَمَاۤ اُنۡزِلَ مِنۡ قَبۡلِكَ يُرِيۡدُوۡنَ اَنۡ
يَّتَحَاكَمُوۡۤا اِلَى الطَّاغُوۡتِ وَقَدۡ اُمِرُوۡۤا اَنۡ يَّكۡفُرُوۡا
بِهٖؕ وَيُرِيۡدُ الشَّيۡطٰنُ اَنۡ يُّضِلَّهُمۡ ضَلٰلاًۢ بَعِيۡدًا
৬০.) হে নবী! তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা এই মর্মে দাবী করে চলেছে যে,
তারা ঈমান এনেছে সেই কিতাবের প্রতি যা তোমার ওপর নাযিল করা হয়েছে এবং সেই
সব কিতাবের প্রতি যেগুলো তোমরা পূর্বে নাযিল করা হয়েছিল কিন্তু তারা
নিজেদের বিষয়সমূহ ফায়সালা করার জন্য ‘তাগুতে’র দিকে ফিরতে চায়, অথচ তাদেরকে
তাগুতকে অস্বীকার করার হুকুম দেয়া হয়েছিল? -- শয়তান তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে
সরল সোজা পথ থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
وَاِذَا قِيۡلَ لَهُمۡ تَعَالَوۡا اِلٰى مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰهُ وَاِلَى
الرَّسُوۡلِ رَاَيۡتَ الۡمُنٰفِقِيۡنَ يَصُدُّوۡنَ عَنۡكَ صُدُوۡدًاۚ
৬১.) আর যখন তাদেরকে বলা হয়, এসো সেই জিনিসের দিকে, যা আল্লাহ নাযিল করেছেন
এবং এসো রসূলের দিকে, তখন তোমরা দেখতে পাও ঐ মুনাফিকরা তোমাদের দিক থেকে
মুখ ফিরিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে।
فَكَيۡفَ اِذَاۤ اَصَابَتۡهُمۡ مُّصِيۡبَةٌۢ بِمَا قَدَّمَتۡ اَيۡدِيۡهِمۡ
ثُمَّ جَآءُوۡكَ يَحۡلِفُوۡنَۖ بِاللّٰهِ اِنۡ اَرَدۡنَاۤ اِلَّاۤ
اِحۡسَانًا وَّتَوۡفِيۡقًا
৬২.) তারপর তখন তাদের কী অবস্থা হয় যখন তাদের কৃতকর্মের ফল স্বরূপ তাদের
ওপর কোন বিপদ এসে পড়ে? তখন তারা কসম খেতে খেতে তোমার কাছে আসে এবং বলতে
থাকেঃ আল্লাহর কসম, আমরা তো কেবল মঙ্গল চেয়েছিলাম এবং উভয় পক্ষের মধ্যে
কোনো প্রকারে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাক, এটিই ছিল আমাদের বাসনা।
اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ يَعۡلَمُ اللّٰهُ مَا فِىۡ قُلُوۡبِهِمۡ
فَاَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَعِظۡهُمۡ وَقُل لَّهُمۡ فِىۡۤ اَنۡفُسِهِمۡ قَوۡلاًۢ
بَلِيۡغًا
৬৩.) ---আল্লাহ জানেন তাদের অন্তরে যা কিছু আছে। তাদের পেছনে লেগো না,
তাদেরকে বুঝাও এবং এমন উপদেশ দাও, যা তাদের হৃদয়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে
যায়।
وَمَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا لِيُطَاعَ بِاِذۡنِ اللّٰهِؕ
وَلَوۡ اَنَّهُمۡ اِذ ظَّلَمُوۡۤا اَنۡفُسَهُمۡ جَآءُوۡكَ
فَاسۡتَغۡفَرُوۡا اللّٰهَ وَاسۡتَغۡفَرَ لَهُمُ الرَّسُوۡلُ لَوَجَدُوۡا
اللّٰهَ تَوَّابًا رَّحِيۡمًا
৬৪.) (তাদেরকে জানিয়ে দাও) আমি যে কোন রসূলই পাঠিয়েছি, এ উদ্দেশ্যেই
পাঠিয়েছি যে, আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী তাঁর আনুগত্য করা হবে। আর যদি তারা এমন
পদ্ধতি অবলম্বন করতো যার ফলে যখন তারা নিজেদের ওপর জুলুম করতো তখন তোমার
কাছে এসে যেতো এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতো আর রসূলও তাদের জন্য ক্ষমার
আবেদন করতো, তাহলে নিঃসন্দেহে তারা আল্লাহকে ক্ষমাকারী ও অনুগ্রহশীল হিসেবে
পেতো।
فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤۡمِنُوۡنَ حَتّٰى يُحَكِّمُوۡكَ فِيۡمَا شَجَرَ
بَيۡنَهُمۡ ثُمَّ لَا يَجِدُوۡا فِىۡۤ اَنۡفُسِهِمۡ حَرَجًا مِّمَّا
قَضَيۡتَ وَيُسَلِّمُوۡا تَسۡلِيۡمًا
৬৫.) না, হে মুহাম্মাদ! তোমার রবের কসম, এরা কখনো মু’মিন হতে পারে না
যতক্ষণ এদের পারস্পরিক মতবিরোধের ক্ষেত্রে এরা তোমাকে ফায়সালাকারী হিসেবে
মেনে না নেবে, তারপর তুমি যা ফায়সালা করবে তার ব্যাপারে নিজেদের মনের মধ্য
যে কোনো প্রকার কুণ্ঠা ও দ্বিধার স্থান দেবে না, বরং সর্বান্তকরণে মেনে
নেবে।
وَلَوۡ اَنَّا كَتَبۡنَا عَلَيۡهِمۡ اَنِ اقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَكُمۡ اَوِ
اخۡرُجُوۡا مِنۡ دِيَارِكُمۡ مَّا فَعَلُوۡهُ اِلَّا قَلِيۡلٌ مِّنۡهُمۡؕ
وَلَوۡ اَنَّهُمۡ فَعَلُوۡا مَا يُوۡعَظُوۡنَ بِهٖ لَكَانَ خَيۡرًا لَّهُمۡ
وَاَشَدَّ تَثۡبِيۡتًاۙ
৬৬.) যদি আমি হুকুম দিতাম, তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো অথবা নিজেদের ঘর থেকে
বের হয়ে যাও, তাহলে তাদের খুব কম লোকই এটাকে কার্যকর করতো। অথচ তাদেরকে যে
নসীহত করা হয় তাকে যদি তারা কার্যকর করতো তাহলে এটি হতো তাদের জন্য অধিকতর
ভালো ও অধিকতর দৃঢ়তা ও অবিচলতার প্রমাণ।
وَّاِذًا لَّاٰتَيۡنٰهُمۡ مِّنۡ لَّدُنَّاۤ اَجۡرًا عَظِيۡمًاۙ
৬৭.) আর এমনটি করলে আমি নিজের পক্ষ থেকে তাদেরকে অনেকে বড় পুরস্কার দিতাম
وَّلَهَدَيۡنٰهُمۡ صِرٰطًا مُّسۡتَقِيۡمًا
৬৮.) এবং তাদেরকে সত্য সরল পথ দেখাতাম।
وَمَنۡ يُّطِعِ اللّٰهَ وَالرَّسُوۡلَ فَاُولٰٓٮِٕكَ مَعَ الَّذِيۡنَ
اَنۡعَمَ اللّٰهُ عَلَيۡهِمۡ مِّنَ النَّبِيّٖنَ وَالصِّدِّيۡقِيۡنَ
وَالشُّهَدَآءِ وَالصّٰلِحِيۡنَؕ وَحَسُنَ اُولٰٓٮِٕكَ رَفِيۡقًاؕ
৬৯.) যে ব্যক্তি আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য করবে সে তাদের সহযোগী হবে,
যাদেরকে আল্লাহ পুরস্কৃত করেছেন নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীলদের মধ্য
থেকে। মানুষ যাদের সঙ্গ লাভ করতে পারে তাদের মধ্যে এরা কতই না চমৎকার
সঙ্গী।
ذٰلِكَ الۡفَضۡلُ مِنَ اللّٰهِؕ وَكَفٰى بِاللّٰهِ عَلِيۡمًا
৭০.) আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া এই হচ্ছে প্রকৃত অনুগ্রহ এবং যথার্থ সত্য জানার জন্য একমাত্র আল্লাহর জ্ঞানই যথেষ্ট।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا خُذُوۡا حِذۡرَكُمۡ فَانفِرُوۡا ثُبَاتٍ اَوِ انفِرُوۡا جَمِيۡعًا
৭১.) হে ঈমানদারগণ! মোকাবিলা করার জন্য সর্বক্ষণ প্রস্তুত থাকো। তারপর
সুযোগ পেলে পৃথক পৃথক বাহিনীতে বিভক্ত হয়ে বের হয়ে পড়ো অথবা এক সাথে।
وَاِنَّ مِنۡكُمۡ لَمَنۡ لَّيُبَطِّئَنَّۚ فَاِنۡ اَصَابَتۡكُمۡ
مُّصِيۡبَةٌ قَالَ قَدۡ اَنۡعَمَ اللّٰهُ عَلَىَّ اِذۡ لَمۡ اَكُنۡ
مَّعَهُمۡ شَهِيۡدًا
৭২.) হ্যাঁ, তোমাদের কেউ কেউ এমনও আছে যে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে গড়িমসি করে।
যদি তোমাদের ওপর কোন মুসিবত এসে পড়ে তাহলে সে বলে আল্লাহ আমার প্রতি বড়ই
অনুগ্রহ করেছেন, আমি তাদের সাথে যাইনি।
وَلَٮِٕنۡ اَصَابَكُمۡ فَضۡلٌ مِّنَ اللّٰهِ لَيَقُوۡلَنَّ كَاَنۡ لَّمۡ
تَكُنۡۢ بَيۡنَكُمۡ وَبَيۡنَهٗ مَوَدَّةٌ يّٰلَيۡتَنِىۡ كُنۡتُ مَعَهُمۡ
فَاَفُوۡزَ فَوۡزًا عَظِيۡمًا
৭৩.) আর যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়, তাহলে সে
বলে—এবং এমনভাবে বলে যেন তোমাদের ও তার মধ্যে কোন প্রীতির সম্পর্ক ছিলই
না,-হায়! যদি আমিও তাদের সাথে হতাম তাহলে বিরাট সাফল্য লাভ করতাম।
فَلۡيُقَاتِلۡ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ الَّذِيۡنَ يَشۡرُوۡنَ الۡحَيٰوةَ
الدُّنۡيَا بِالۡاٰخِرَةِؕ وَمَنۡ يُّقَاتِلۡ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ
فَيُقۡتَلۡ اَوۡ يَغۡلِبۡ فَسَوۡفَ نُؤۡتِيۡهِ اَجۡرًا عَظِيۡمًا
৭৪.) (এই ধরনের লোকদের জানা উচিত) আল্লাহর পথে তাদের লড়াই করা উচিত যারা
আখেরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবন বিকিয়ে দেয়। তারপর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে
লড়বে এবং মারা যাবে অথবা বিজয়ী হবে তাকে নিশ্চয়ই আমি মহাপুরস্কার দান করবো।
وَمَا لَكُمۡ لَا تُقَاتِلُوۡنَ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ
وَالۡمُسۡتَضۡعَفِيۡنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَآءِ وَالۡوِلۡدَانِ
الَّذِيۡنَ يَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَاۤ اَخۡرِجۡنَا مِنۡ هٰذِهِ الۡقَرۡيَةِ
الظَّالِمِ اَهۡلُهَاۚ وَاجۡعَل لَّنَا مِنۡ لَّدُنۡكَ وَلِيًّا ۙۚ
وَّاجۡعَل لَّنَا مِنۡ لَّدُنۡكَ نَصِيۡرًاؕ
৭৫.) তোমাদের কী হলো, তোমরা আল্লাহর পথে অসহায় নরনারী ও শিশুদের জন্য লড়বে
না, যারা দুর্বলতার কারণে নির্যাতিত হচ্ছে? তারা ফরিয়াদ করছে, হে আমাদের
রব! এই জনপদ থেকে আমাদের বের করে নিয়ে যাও, যার অধিবাসীরা জালেম এবং তোমার
পক্ষ থেকে আমাদের কোন বন্ধু, অভিভাবক ও সাহায্যকারী তৈরী করে দাও।
اَلَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا يُقَاتِلُوۡنَ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِۚ
وَالَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا يُقَاتِلُوۡنَ فِىۡ سَبِيۡلِ الطَّاغُوۡتِ
فَقَاتِلُوۡۤا اَوۡلِيَآءَ الشَّيۡطٰنِۚ اِنَّ كَيۡدَ الشَّيۡطٰنِ كَانَ
ضَعِيۡفًا
৭৬.) যারা ঈমানের পথ অবলম্বন করেছে তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে। আর যারা
কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে তারা লড়াই করে তাগুতের পথে।১০৫ কাজেই শয়তানের
সহযোগীদের সাথে লড়ো এবং নিশ্চিত জেনে রাখো, শয়তানের কৌশল আসলে নিতান্তই
দুর্বল।
اَلَمۡ تَرَ اِلَى الَّذِيۡنَ قِيۡلَ لَهُمۡ كُفُّوۡۤا اَيۡدِيَكُمۡ
وَاَقِيۡمُوۡا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوۡا الزَّكٰوةَۚ فَلَمَّا كُتِبَ
عَلَيۡهِمُ الۡقِتَالُ اِذَا فَرِيۡقٌ مِّنۡهُمۡ يَخۡشَوۡنَ النَّاسَ
كَخَشۡيَةِ اللّٰهِ اَوۡ اَشَدَّ خَشۡيَةًۚ وَقَالُوۡا رَبَّنَا لِمَ
كَتَبۡتَ عَلَيۡنَا الۡقِتَالَۚ لَوۡلَاۤ اَخَّرۡتَنَاۤ اِلٰٓى اَجَلٍ
قَرِيۡبٍؕ قُلۡ مَتَاعُ الدُّنۡيَا قَلِيۡلٌۚ وَالۡاٰخِرَةُ خَيۡرٌ
لِّمَنِ اتَّقٰى وَلَا تُظۡلَمُوۡنَ فَتِيۡلاً
৭৭.) তোমরা কি তাদেরকেও দেখেছো, যাদেরকে বলা হয়েছিল, তোমাদের হাত গুটিয়ে
রাখো এবং নামায কায়েম করো ও যাকাত দাও? এখন তাদেরকে যুদ্ধের হুকুম দেয়ায়
তাদের একটি দলের অবস্থা এই দাঁড়িয়েছে যে, তারা মানুষকে এমন ভয় করেছে যেমন
আল্লাহকে ভয় করা উচিত অথবা তার চেয়েও বেশী। তারা বলছেঃ হে আমাদের রব!
আমাদের জন্য এই যুদ্ধের হুকুমনামা কেন লিখে দিলে? আমাদের আরো কিছু সময়
অবকাশ দিলে না কেন? তাদেরকে বলোঃ দুনিয়ার জীবন ও সম্পদ অতি সামান্য এবং
একজন আল্লাহর ভয়ে ভীত মানুষের জন্য আখেরাতই উত্তম। আর তোমাদের ওপর এক চুল
পরিমাণও জুলুম করা হবে না।
اَيۡنَ مَا تَكُوۡنُوۡا يُدۡرِككُّمُ الۡمَوۡتُ وَلَوۡ كُنۡتُمۡ فِىۡ
بُرُوۡجٍ مُّشَيَّدَةٍؕ وَاِنۡ تُصِبۡهُمۡ حَسَنَةٌ يَّقُوۡلُوۡا هٰذِهٖ
مِنۡ عِنۡدِ اللّٰهِۚ وَاِنۡ تُصِبۡهُمۡ سَيِّئَةٌ يَّقُوۡلُوۡا هٰذِهٖ
مِنۡ عِنۡدِكَؕ قُلۡ كُلٌّ مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰهِؕ فَمَالِ هٰٓؤُلَآءِ
الۡقَوۡمِ لَا يَكَادُوۡنَ يَفۡقَهُوۡنَ حَدِيۡثًا
৭৮.) আর মৃত্যু, সে তোমরা যেখানেই থাকো না কেন সেখানে তোমাদের নাগাল পাবেই,
তোমরা কোন মজবুত প্রাসাদে অবস্থান করলেও। যদি তাদের কোন কল্যাণ হয় তাহলে
তারা বলে, এতো আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে। আর কোন ক্ষতি হলে বলে, এটা হয়েছে
তোমার বদৌলতে। বলে দাও, সবকিছুই হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে। লোকদের কী হয়েছে,
কোন কথাই তারা বোঝে না।
مَاۤ اَصَابَكَ مِنۡ حَسَنَةٍ فَمِنَ اللّٰهِ وَمَاۤ اَصَابَكَ مِنۡ
سَيِّئَةٍ فَمِنۡ نَّفۡسِكَؕ وَاَرۡسَلۡنٰكَ لِلنَّاسِ رَسُوۡلاًؕ
وَكَفٰى بِاللّٰهِ شَهِيۡدًا
৭৯.) হে মানুষ! যে কল্যাণই তুমি লাভ করে থাকো তা আল্লাহর দান এবং যে বিপদ
তোমার ওপর এসে পড়ে তা তোমার নিজের উপার্জন ও কাজের বদৌলতেই আসে। হে
মুহাম্মাদ! আমি তোমাকে মানব জাতির জন্য রসূল বানিয়ে পাঠিয়েছি এবং এরপর
আল্লাহর সাক্ষ্য যথেষ্ট।
مَنۡ يُّطِعِ الرَّسُوۡلَ فَقَدۡ اَطَاعَ اللّٰهَۚ وَمَنۡ تَوَلّٰى فَمَاۤ اَرۡسَلۡنٰكَ عَلَيۡهِمۡ حَفِيۡظًاؕ
৮০.) যে ব্যক্তি রসূলের আনুগত্য করলো সে আসলে আল্লাহরই আনুগত্য করলো। আর যে
ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নিলো, যাই হোক, তাদের ওপর তো আমি তোমাকে পাহারাদার
বানিয়ে পাঠাইনি।
وَيَقُوۡلُوۡنَ طَاعَةٌ فَاِذَا بَرَزُوۡا مِنۡ عِنۡدِكَ بَيَّتَ
طَآٮِٕفَةٌ مِّنۡهُمۡ غَيۡرَ الَّذِىۡ تَقُوۡلُؕ وَاللّٰهُ يَكۡتُبُ مَا
يُبَيِّتُوۡنَۚ فَاَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَتَوَكَّلۡ عَلَى اللّٰهِؕ وَكَفٰى
بِاللّٰهِ وَكِيۡلاً
৮১.) তারা মুখে বলে, আমরা অনুগত ফরমাবরদার। কিন্তু যখন তোমার কাছ থেকে বের
হয়ে যায় তখন তাদের একটি দল রাত্রে সমবেত হয়ে তোমার কথার বিরুদ্ধে পরামর্শ
করে। আল্লাহ তাদের এই সমস্ত কানকথা লিখে রাখছেন। তুমি তাদের পরোয়া করো না,
আল্লাহর ওপর ভরসা করো, ভরসা করার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।
اَفَلَا يَتَدَبَّرُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَؕ وَلَوۡ كَانَ مِنۡ عِنۡدِ غَيۡرِ اللّٰهِ لَوَجَدُوۡا فِيۡهِ اخۡتِلَافًا كَثِيۡرًا
৮২.) তারা কি কুরআন সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে না? যদি এটি আল্লাহ ছাড়া আর
কারো পক্ষ থেকে হতো, তাহলে তারা এর মধ্যে বহু বর্ণনাগত অসঙ্গতি খুঁজে
পেতো।
وَاِذَا جَآءَهُمۡ اَمۡرٌ مِّنَ الۡاَمۡنِ اَوِ الۡخَوۡفِ اَذَاعُوۡا
بِهٖۚ وَلَوۡ رَدُّوۡهُ اِلَى الرَّسُوۡلِ وَاِلٰٓى اُولِىۡ الۡاَمۡرِ
مِنۡهُمۡ لَعَلِمَهُ الَّذِيۡنَ يَسۡتَنۡۢبِطُوۡنَهٗ مِنۡهُمۡؕ وَلَوۡلَا
فَضۡلُ اللّٰهِ عَلَيۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهٗ لَاتَّبَعۡتُمُ الشَّيۡطٰنَ اِلَّا
قَلِيۡلاً
৮৩.) তারা যখনই কোন সন্তোষজনক বা ভীতিপ্রদ খবর শুনতে পায় তখনই তা চারদিকে
ছড়িয়ে দেয়। অথচ তারা যদি এটা রসূল ও তাদের জামায়াতের দায়িত্বশীল লোকদের
নিকট পৌঁছিয়ে দেয়, তাহলে তা এমন লোকদের গোচরীভূত হয়, যারা তাদের মধ্যে কথা
বলার যোগ্যতা রাখে এবং তা থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। তোমাদের
প্রতি যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত না হতো তাহলে (তোমাদের এমন সব দুর্বলতা
ছিল যে) মুষ্টিমেয় কয়েকজন ছাড়া তোমরা সবাই শয়তানের পেছনে চলতে থাকতে।
فَقَاتِلۡ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِۚ لَا تُكَلَّفُ اِلَّا نَفۡسَكَ
وَحَرِّضِ الۡمُؤۡمِنِيۡنَۚ عَسَى اللّٰهُ اَنۡ يَّكُفَّ بَاۡسَ
الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡاؕ وَاللّٰهُ اَشَدُّ بَاۡسًا وَّاَشَدُّ تَنۡكِيۡلاً
৮৪.) কাজেই হে নবী! তুমি আল্লাহর পথে লড়াই করো। তুমি নিজের সত্তা ছাড়া আর
কারো জন্য দায়ী নও। অবশ্যি ঈমানদারদেরকে লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করো। আল্লাহ
শীঘ্রই কাফেরদের শক্তির মস্তক চূর্ণ করে দেবেন। আল্লাহর শক্তি সবচেয়ে
জবরদস্ত এবং তাঁর শাস্তি সবচেয়ে বেশী কঠোর।
مَنۡ يَّشۡفَعۡ شَفَاعَةً حَسَنَةً يَّكُنۡ لَّهٗ نَصِيۡبٌ مِّنۡهَاۚ
وَمَنۡ يَّشۡفَعۡ شَفَاعَةً سَيِّئَةً يَّكُنۡ لَّهٗ كِفۡلٌ مِّنۡهَاؕ
وَكَانَ اللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ مُّقِيۡتًا
৮৫.) যে ব্যক্তি কল্যাণ ও সৎকাজের সুপারিশ করবে, সে তা থেকে অংশ পাবে এবং
যে ব্যক্তি অকল্যাণ ও অসৎকাজের সুপারিশ করবে, সে তা থেকে অংশ পাবে। আর
আল্লাহ সব জিনিসের প্রতি নজর রাখেন।
وَاِذَا حُيِّيۡتُمۡ بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوۡا بِاَحۡسَنَ مِنۡهَاۤ اَوۡ
رُدُّوۡهَاؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ حَسِيۡبًا
৮৬.) আর যখনই কেউ মর্যাদা সহকারে তোমাকে সালাম করে তখন তাকে তার চাইতে ভালো
পদ্ধতিতে জবাব দাও অথবা কমপক্ষে তেমনিভাবে। আল্লাহ সব জিনিসের হিসেব
গ্রহণকারী।
اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَؕ لَيَجۡمَعَنَّكُمۡ اِلٰى يَوۡمِ
الۡقِيٰمَةِ لَا رَيۡبَ فِيۡهِؕ وَمَنۡ اَصۡدَقُ مِنَ اللّٰهِ حَدِيۡثًا
৮৭.) আল্লাহ তিনিই যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি তোমাদের সবাইকে সেই
কিয়ামতের দিন একত্র করবেন, যার আসার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। আর আল্লাহর
কথার চাইতে বেশী সত্য আর কার কথা হতে পারে?
فَمَا لَكُمۡ فِىۡ الۡمُنٰفِقِيۡنَ فِئَتَيۡنِ وَاللّٰهُ اَرۡكَسَهُمۡ
بِمَا كَسَبُوۡاؕ اَتُرِيۡدُوۡنَ اَنۡ تَهۡدُوۡا مَنۡ اَضَلَّ اللّٰهُؕ
وَمَنۡ يُّضۡلِلِ اللّٰهُ فَلَنۡ تَجِدَ لَهٗ سَبِيۡلاً
৮৮.) তারপর তোমাদের কী হয়েছে, মুনাফিকদের ব্যাপারে তোমাদের মধ্যে দ্বিমত
পাওয়া যাচ্ছে? অথচ যে দুষ্কৃতি তারা উপার্জন করেছে তার বদৌলতে আল্লাহ
তাদেরকে উল্টো দিকে ফিরিয়ে দিয়েছে। তোমরা কি চাও, আল্লাহ যাকে হিদায়াত দান
করেননি তোমরা তাকে হিদায়াত করবে? অথচ আল্লাহ যাকে পথ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন
তার জন্য তুমি কোন পথ পাবে না।
وَدُّوۡا لَوۡ تَكۡفُرُوۡنَ كَمَا كَفَرُوۡا فَتَكُوۡنُوۡنَ سَوَآءً
فَلَا تَتَّخِذُوۡا مِنۡهُمۡ اَوۡلِيَآءَ حَتّٰى يُهَاجِرُوۡا فِىۡ
سَبِيۡلِ اللّٰهِؕ فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَخُذُوۡهُمۡ وَاقۡتُلُوۡهُمۡ حَيۡثُ
وَجَدتُّمُوۡهُمۡۚ وَلَا تَتَّخِذُوۡا مِنۡهُمۡ وَلِيًّا وَّلَا
نَصِيۡرًاۙ
৮৯.) তারা তো এটাই চায়, তারা নিজেরা যেমন কাফের হয়েছে তেমনি তোমরাও কাফের
হয়ে যাও, যাতে তারা ও তোমরা সমান হয়ে যাও। কাজেই তাদের মধ্য থেকে কাউকেও
নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না যতক্ষণ না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে
আসে। আর যদি তারা (হিজরত থেকে) বিরত থাকে, তাহলে তাদেরকে যেখানেই পাও ধরো
এবং হত্যা করো এবং তাদের মধ্য থেকে কাউকেও নিজেদের বন্ধু ও সাহায্যকারী
হিসেবে গ্রহণ করো না।
اِلَّا الَّذِيۡنَ يَصِلُوۡنَ اِلٰى قَوۡمٍۭ بَيۡنَكُمۡ وَبَيۡنَهُمۡ
مِّيۡثَاقٌ اَوۡ جَآءُوۡكُمۡ حَصِرَتۡ صُدُوۡرُهُمۡ اَنۡ يُّقَاتِلُوۡكُمۡ
اَوۡ يُقَاتِلُوۡا قَوۡمَهُمۡؕ وَلَوۡ شَآءَ اللّٰهُ لَسَلَّطَهُمۡ
عَلَيۡكُمۡ فَلَقٰتَلُوۡكُمۡۚ فَاِنِ اعۡتَزَلُوۡكُمۡ فَلَمۡ
يُقَاتِلُوۡكُمۡ وَاَلۡقَوۡا اِلَيۡكُمُ السَّلَمَۙ فَمَا جَعَلَ اللّٰهُ
لَكُمۡ عَلَيۡهِمۡ سَبِيۡلاً
৯০.) অবশ্যি সেই সব মুনাফিক এই নির্দেশের আওতাভুক্ত নয়, যারা এমন কোন জাতির
সাথে মিলিত হয়, যাদের সাথে তোমরা চুক্তিবদ্ধ। এভাবে সেই সব মুনাফিকও এর
আওতাভুক্ত নয়, যারা তোমাদের কাছে আসে এবং যুদ্ধের ব্যাপারে অনুৎসাহিত, না
তোমাদের বিরুদ্ধে লড়তে চায়, না নিজেদের জাতির বিরুদ্ধে। আল্লাহ চাইলে
তাদেরকে তোমাদের ওপর চাপিয়ে দিতেন এবং তারাও তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন।
কাজেই তারা যদি তোমাদের থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং যুদ্ধ থেকে বিরত থাকে আর
তোমাদের দিকে সন্ধি ও সখ্যতার হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে আল্লাহ তোমাদের জন্য
তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করার কোন পথ রাখেননি।
سَتَجِدُوۡنَ اٰخَرِيۡنَ يُرِيۡدُوۡنَ اَنۡ يَّاۡمَنُوۡكُمۡ وَيَاۡمَنُوۡا
قَوۡمَهُمۡؕ كُلَّمَا رُدُّوۡۤا اِلَى الۡفِتۡنَةِ اُرۡكِسُوۡا فِيۡهَاۚ
فَاِنۡ لَّمۡ يَعۡتَزِلُوۡكُمۡ وَيُلۡقُوۡۤا اِلَيۡكُمُ السَّلَمَ
وَيَكُفُّوۡۤا اَيۡدِيَهُمۡ فَخُذُوۡهُمۡ وَاقۡتُلُوۡهُمۡ حَيۡثُ
ثَقِفۡتُمُوۡهُمۡؕ وَاُولٰٓٮِٕكُمۡ جَعَلۡنَا لَكُمۡ عَلَيۡهِمۡ سُلۡطٰنًا
مُّبِيۡنًا
৯১.) তোমরা আর এক ধরনের মুনাফিক পাবে, যারা চায় তোমাদের থেকে নিরাপদ থাকতে
এবং নিজেদের জাতি থেকেও। কিন্তু যখনই ফিতনার সুযোগ পাবে তারা তার মধ্যে
ঝাঁপিয়ে পড়বে। এই ধরনের লোকেরা যদি তোমাদের সাথে মোকাবিলা করা থেকে বিরত না
থাকে, তোমাদের কাছে সন্ধি ও শান্তির আবেদন পেশ না করে এবং নিজেদের হাত
টেনে না রাখে, তাহলে তাদেরকে যেখানেই পাও ধরো এবং হত্যা করো। তাদের ওপর হাত
উঠাবার জন্য আমি তোমাদেরকে সুস্পষ্ট অধিকার দান করলাম।
وَمَا كَانَ لِمُؤۡمِنٍ اَنۡ يَّقۡتُلَ مُؤۡمِنًا اِلَّا خَطَـًٔاۚ
وَمَنۡ قَتَلَ مُؤۡمِنًا خَطَـًٔا فَتَحۡرِيۡرُ رَقَبَةٍ مُّؤۡمِنَةٍ
وَّدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ اِلٰٓى اَهۡلِهٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ يَّصَّدَّقُوۡاؕ
فَاِنۡ كَانَ مِنۡ قَوۡمٍ عَدُوٍّ لَّكُمۡ وَهُوَ مُؤۡمِنٌ فَتَحۡرِيۡرُ
رَقَبَةٍ مُّؤۡمِنَةٍؕ وَاِنۡ كَانَ مِنۡ قَوۡمٍۭ بَيۡنَكُمۡ وَبَيۡنَهُمۡ
مِّيۡثَاقٌ فَدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ اِلٰٓى اَهۡلِهٖ وَتَحۡرِيۡرُ رَقَبَةٍ
مُّؤۡمِنَةٍۚ فَمَنۡ لَّمۡ يَجِدۡ فَصِيَامُ شَهۡرَيۡنِ مُتَتَابِعَيۡنِ
تَوۡبَةً مِّنَ اللّٰهِؕ وَكَانَ اللّٰهُ عَلِيۡمًا حَكِيۡمًا
৯২.) কোন মুমিনের কাজ নয় অন্য মুমিনকে হত্যা করা, তবে ভুলবশত হতে পারে। আর
যে ব্যক্তি ভুলবশত কোন মুমিনকে হত্যা করে তার কাফ্ফারা হিসেবে একজন
মুমিনকে গোলামী থেকে মুক্ত করে দিতে হবে এবং নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসদেরকে
রক্ত মূল্য দিতে হবে তবে যদি তারা রক্ত মূল্য মাফ করে দেয় তাহলে স্বতন্ত্র
কথা। কিন্তু যদি ঐ নিহত মুসলিম ব্যক্তি এমন কোন জাতির অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে
যাদের সাথে তোমাদের শত্রুতা রয়েছে তাহলে একজন মুমিন গোলামকে মুক্ত করে
দেয়াই হবে তার কাফ্ফারা। আর যদি সে এমন কোন অমুসলিম জাতির অন্তর্ভুক্ত হয়ে
থাকে যাদের সাথে তোমাদের চুক্তি রয়েছে, তাহলে তার ওয়ারিসদেরকে রক্ত মূল্য
দিতে হবে এবং একজন মুমিন গোলামকে মুক্ত করে দিতে হবে। আর যে ব্যক্তি কোন
গোলাম পাবে না তাকে পরপর দু’মাস রোযা রাখতে হবে। এটিই হচ্ছে এই গোনাহের
ব্যাপারে আল্লাহর কাছে তাওবা করার পদ্ধতি। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও জ্ঞানময়।
وَمَنۡ يَّقۡتُلۡ مُؤۡمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهٗ جَهَنَّمُ
خَالِدًا فِيۡهَا وَغَضِبَ اللّٰهُ عَلَيۡهِ وَلَعَنَهٗ وَاَعَدَّ لَهٗ
عَذَابًا عَظِيۡمًا
৯৩.) আর যে ব্যক্তিজেনে বুঝে মুমিনকে হত্যা করে, তার শাস্তি হচ্ছে
জাহান্নাম। সেখানে চিরকাল থাকবে। তার ওপর আল্লাহর গযব ও তাঁর লানত এবং
আল্লাহ তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا ضَرَبۡتُمۡ فِىۡ سَبِيۡلِ
اللّٰهِ فَتَبَيَّنُوۡا وَلَا تَقُوۡلُوۡا لِمَنۡ اَلۡقٰٓى اِلَيۡكُمُ
السَّلٰمَ لَسۡتَ مُؤۡمِنًاۚ تَبۡتَغُوۡنَ عَرَضَ الۡحَيٰوةِ الدُّنۡيَا
فَعِنۡدَ اللّٰهِ مَغَانِمُ كَثِيۡرَةٌؕ كَذٰلِكَ كُنۡتُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ
فَمَنَّ اللّٰهُ عَلَيۡكُمۡ فَتَبَيَّنُوۡاؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِمَا
تَعۡمَلُوۡنَ خَبِيۡرًا
৯৪.) হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদ করার জন্য বের হও তখন
বন্ধু ও শত্রুর মধ্যে পার্থক্য করো এবং যে ব্যক্তি সালামের মাধ্যমে তোমাদের
দিকে এগিয়ে আসে তাকে সঙ্গে সঙ্গেই বলে দিয়ো না যে, তুমি মুমিন নও। যদি
তোমরা বৈষয়িক স্বার্থলাভ করতে চাও তাহলে আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য অনেক
গণীমাতের মাল রয়েছে। ইতিপূর্বে তোমরা নিজেরাও তো একই অবস্থায় ছিলে। তারপর
আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। কাজেই তোমরা অনুসন্ধান করে পদক্ষেপ
গ্রহণ করো। তোমরা যা কিছু করছো সে সম্পর্কে আল্লাহ অবহিত।
لَا يَسۡتَوِىۡ الۡقَاعِدُوۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ غَيۡرُ اُولِىۡ
الضَّرَرِ وَالۡمُجٰهِدُوۡنَ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ بِاَمۡوَالِهِمۡ
وَاَنۡفُسِهِمۡؕ فَضَّلَ اللّٰهُ الۡمُجٰهِدِيۡنَ بِاَمۡوَالِهِمۡ
وَاَنۡفُسِهِمۡ عَلَى الۡقٰعِدِيۡنَ دَرَجَةًؕ وَكُلاًّ وَّعَدَ اللّٰهُ
الۡحُسۡنٰىؕ وَفَضَّلَ اللّٰهُ الۡمُجٰهِدِيۡنَ عَلَى الۡقٰعِدِيۡنَ
اَجۡرًا عَظِيۡمًاۙ
৯৫.) যেসব মুসলমান কোনো প্রকার অক্ষমতা ছাড়াই ঘরে বসে থাকে আর যারা
ধন-প্রাণ দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করে, তাদের উভয়ের মর্যাদা সমান নয়। যারা
ঘরে বসে থাকে তাদের তুলনায় জানমাল দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের মর্যাদা
আল্লাহ বুলন্দ করেছেন। যদিও সবার জন্য আল্লাহ কল্যাণ ও নেকীর ওয়াদা
করেছেন তবুও তাঁর কাছে মুজাহিদদের কাজের বিনিময় বসে থাকা লোকদের তুলনায়
অনেক বেশী।
دَرَجٰتٍ مِّنۡهُ وَمَغۡفِرَةً وَّرَحۡمَةًؕ وَكَانَ اللّٰهُ غَفُوۡرًا رَّحِيۡمًا
৯৬.) তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে বিরাট মর্যাদা, মাগফেরাত ও রহমত। আর আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
اِنَّ الَّذِيۡنَ تَوَفّٰٮهُمُ الۡمَلٰٓٮِٕكَةُ ظَالِمِىۡۤ اَنۡفُسِهِمۡ
قَالُوۡا فِيۡمَ كُنۡتُمۡؕ قَالُوۡا كُنَّا مُسۡتَضۡعَفِيۡنَ فِىۡ
الۡاَرۡضِؕ قَالُوۡۤا اَلَمۡ تَكُنۡ اَرۡضُ اللّٰهِ وَاسِعَةً
فَتُهَاجِرُوۡا فِيۡهَاؕ فَاُولٰٓٮِٕكَ مَاۡوٰٮهُمۡ جَهَنَّمُؕ
وَسَآءَتۡ مَصِيۡرًاۙ
৯৭.) যারা নিজেদের ওপর জুলুম করছিল ফেরেশতারা তাদের জান কবজ করার সময়
জিজ্ঞেস করলোঃ তোমরা কি অবস্থায় ছিলে? তারা জবাব দিল, আমরা পৃথিবীতে ছিলাম
দুর্বল ও অক্ষম। ফেরেশতারা বললোঃ আল্লাহর যমীন কি প্রশস্ত ছিল না? তোমরা কি
সেখানে হিজরত করে অন্যস্থানে যেতে পারতে না? জাহান্নাম এসব লোকের আবাস
স্থিরীকৃত হয়েছে এবং আবাস হিসেবে তা বড়ই খারাপ জায়গা।
اِلَّا الۡمُسۡتَضۡعَفِيۡنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَآءِ وَالۡوِلۡدَانِ
لَا يَسۡتَطِيۡعُوۡنَ حِيۡلَةً وَّلَا يَهۡتَدُوۡنَ سَبِيۡلاًۙ
৯৮.) তবে যেসব পুরুষ, নারী ও শিশু যথার্থই অসহায় এবং তারা বের হবার কোন পথ-উপায় খুঁজে পায় না,
فَاُولٰٓٮِٕكَ عَسَى اللّٰهُ اَنۡ يَّعۡفُوَ عَنۡهُمۡؕ وَكَانَ اللّٰهُ عَفُوًّا غَفُوۡرًا
৯৯.) আল্লাহ তাদেরকে মাফ করে দেবেন এবং আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
وَمَنۡ يُّهَاجِرۡ فِىۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ يَجِدۡ فِىۡ الۡاَرۡضِ مُرٰغَمًا
كَثِيۡرًا وَّسَعَةًؕ وَمَنۡ يَّخۡرُجۡ مِنۡۢ بَيۡتِهٖ مُهَاجِرًا اِلَى
اللّٰهِ وَرَسُوۡلِهٖ ثُمَّ يُدۡرِكۡهُ الۡمَوۡتُ فَقَدۡ وَقَعَ اَجۡرُهٗ
عَلَى اللّٰهِؕ وَكَانَ اللّٰهُ غَفُوۡرًا رَّحِيۡمًا
১০০.) যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে হিজরত করবে, সে পৃথিবীতে আশ্রয়লাভের জন্য
অনেক জায়গা এবং সময় অতিবাহিত করার জন্য বিরাট অবকাশ পাবে। আর যে ব্যক্তি
নিজের গৃহ থেকে আল্লাহ ও রসূলের দিকে হিজরত করার জন্য বের হবে তারপর পথেই
তার মৃত্যু হবে, তার প্রতিদান দেয়া আল্লাহর জন্য ওয়াজিব হয়ে গেছে। আল্লাহ
বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
وَاِذَا ضَرَبۡتُمۡ فِىۡ الۡاَرۡضِ فَلَيۡسَ عَلَيۡكُمۡ جُنَاحٌ اَنۡ
تَقۡصُرُوۡا مِنَ الصَّلٰوةِ ۖاِنۡ خِفۡتُمۡ اَنۡ يَّفۡتِنَكُمُ
الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡاؕ اِنَّ الۡكٰفِرِيۡنَ كَانُوۡا لَكُمۡ عَدُوًّا
مُّبِيۡنًا
১০১.) আর যখন তোমরা সফরে বের হও তখন নামায সংক্ষেপ করে নিলে কোন ক্ষতি নেই।
(বিশেষ করে) যখন তোমাদের আশঙ্কা হয় যে, কাফেররা তোমাদেরকে কষ্ট দেবে। কারণ
তারা প্রকাশ্যে তোমাদের শত্রুতা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
وَاِذَا كُنۡتَ فِيۡهِمۡ فَاَقَمۡتَ لَهُمُ الصَّلٰوةَ فَلۡتَقُمۡ
طَآٮِٕفَةٌ مِّنۡهُمۡ مَّعَكَ وَلۡيَاۡخُذُوۡۤا اَسۡلِحَتَهُمۡ فَاِذَا
سَجَدُوۡا فَلۡيَكُوۡنُوۡا مِنۡ وَّرَآٮِٕكُمۡ وَلۡتَاۡتِ طَآٮِٕفَةٌ
اُخۡرٰى لَمۡ يُصَلُّوۡا فَلۡيُصَلُّوۡا مَعَكَ وَلۡيَاۡخُذُوۡا حِذۡرَهُمۡ
وَاَسۡلِحَتَهُمۡۚ وَدَّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا لَوۡ تَغۡفُلُوۡنَ عَنۡ
اَسۡلِحَتِكُمۡ وَاَمۡتِعَتِكُمۡ فَيَمِيۡلُوۡنَ عَلَيۡكُمۡ مَّيۡلَةً
وَّاحِدَةًؕ وَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ اِنۡ كَانَ بِكُمۡ اَذًى مِّنۡ
مَّطَرٍ اَوۡ كُنۡتُمۡ مَّرۡضٰىۤ اَنۡ تَضَعُوۡۤا اَسۡلِحَتَكُمۡۚ
وَخُذُوۡا حِذۡرَكُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ اَعَدَّ لِلۡكٰفِرِيۡنَ عَذَابًا
مُّهِيۡنًا
১০২.) আর হে নবী! যখন তুমি মুসলমানদের মধ্যে থাকো এবং (যুদ্ধাবস্থায়)
তাদেরকে নামায পড়াবার জন্য দাঁড়াও তখন তাদের মধ্য থেকে একটি দলের তোমার
সাথে দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত এবং তারা অস্ত্রসস্ত্র সঙ্গে নেবে। তারপর তারা
সিজদা করে নিলে পেছনে চলে যাবে এবং দ্বিতীয় দলটি, যারা এখনো নামায পড়েনি,
তারা এসে তোমার সাথে নামায পড়বে। আর তারাও সতর্ক থাকবে এবং নিজেদের
অস্ত্রশস্ত্র বহন করবে। কারণ কাফেররা সুযোগের অপেক্ষায় আছে, তোমরা নিজেদের
অস্ত্রশস্ত্র ও জিনিস পত্রের দিক থেকে সামান্য গাফেল হলেই তারা তোমাদের ওপর
অকস্মাৎ ঝাঁপিয়ে পড়বে। তবে যদি তোমরা বৃষ্টির কারণে কষ্ট অনুভব করো অথবা
অসুস্থ থাকো, তাহলে অস্ত্র রেখে দিলে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু তবুও সতর্ক
থাকো। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ কাফেরদের জন্য লাঞ্ছনাকর আযাবের
ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
فَاِذَا قَضَيۡتُمُ الصَّلٰوةَ فَاذۡكُرُوۡا اللّٰهَ قِيَامًا
وَّقُعُوۡدًا وَّعَلٰى جُنُوۡبِكُمۡۚؕ فَاِذَا اطۡمَاۡنَنۡتُمۡ
فَاَقِيۡمُوۡا الصَّلٰوةَۚ اِنَّ الصَّلٰوةَ كَانَتۡ عَلَى
الۡمُؤۡمِنِيۡنَ كِتٰبًا مَّوۡقُوۡتًا
১০৩.) তারপর তোমরা নামায শেষ করার পর দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সব অবস্থায়
আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো। আর মানসিক প্রশান্তি লাভ করার পর পুরো নামায পড়ে
নাও। আসলে নামায নির্ধারিত সময়ে পড়ার জন্য মুমিনদের ওপর ফরয করা হয়েছে।
وَلَا تَهِنُوۡا فِىۡ ابۡتِغَآءِ الۡقَوۡمِؕ اِنۡ تَكُوۡنُوۡا
تَاۡلَمُوۡنَ فَاِنَّهُمۡ يَاۡلَمُوۡنَ كَمَا تَاۡلَمُوۡنَۚ وَتَرۡجُوۡنَ
مِنَ اللّٰهِ مَا لَا يَرۡجُوۡنَؕ وَكَانَ اللّٰهُ عَلِيۡمًا حَكِيۡمًا
১০৪.) এই দলের পশ্চাদ্ধাবনে তোমরা দুর্বলতা প্রদর্শন করো না। যদি তোমরা
যন্ত্রণা ভোগ করে থাকো তাহলে তোমাদের মতো তারাও যন্ত্রণা ভোগ করেছে। আর
তোমরা আল্লাহর কাছে এমন জিনিস আশা করো, যা তারা আশা করে না। আল্লাহ সবকিছু
জানেন, তিনি জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান।
اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنَاۤ اِلَيۡكَ الۡكِتٰبَ بِالۡحَقِّ لِتَحۡكُمَ بَيۡنَ
النَّاسِ بِمَاۤ اَرٰٮكَ اللّٰهُؕ وَلَا تَكُنۡ لِّلۡخَآٮِٕنِيۡنَ
خَصِيۡمًاۙ
১০৫.) হে নবী! আমি সত্য সহকারে এই কিতাব তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে
আল্লাহ তোমাকে যে সঠিক পথ দেখিয়েছেন সেই অনুযায়ী তুমি লোকদের মধ্যে
ফায়সালা করতে পারো। তুমি খেয়ানতকারী ও বিশ্বাস ভংগকারীদের পক্ষ থেকে
বিতর্ককারী হয়ো না।
وَاسۡتَغۡفِرِ اللّٰهَؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ غَفُوۡرًا رَّحِيۡمًاۚ
১০৬.) আর আল্লাহর কাছে ক্ষমার আবেদন করো। আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময়।
وَلَا تُجَادِلۡ عَنِ الَّذِيۡنَ يَخۡتَانُوۡنَ اَنۡفُسَهُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا يُحِبُّ مَنۡ كَانَ خَوَّانًا اَثِيۡمًا ۙۚ
১০৭.) যারা নিজেদের সাথে খেয়ানত ও প্রতারণা করে, তুমি তাদের সমর্থন করো না। আল্লাহ খেয়ানতকারী পাপীকে পছন্দ করেন না।
يَسۡتَخۡفُوۡنَ مِنَ النَّاسِ وَلَا يَسۡتَخۡفُوۡنَ مِنَ اللّٰهِ وَهُوَ
مَعَهُمۡ اِذۡ يُبَيِّتُوۡنَ مَا لَا يَرۡضٰى مِنَ الۡقَوۡلِؕ وَكَانَ
اللّٰهُ بِمَا يَعۡمَلُوۡنَ مُحِيۡطًا
১০৮.) এরা মানুষের কাছ থেকে নিজেদের কার্যকলাপ গোপন করতে পারে কিন্তু
আল্লাহর কাছ থেকে গোপন করতে পারে না। তিনি তো তখনো তাদের সাথে থাকেন যখন
তারা রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে তিনি যা চান না এমন বিষয়ের পরামর্শ করে।
আল্লাহ তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ডকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।
هٰۤاَنۡتُمۡ هٰٓؤُلَآءِ جَادَلۡتُمۡ عَنۡهُمۡ فِىۡ الۡحَيٰوةِ
الدُّنۡيَا فَمَنۡ يُّجَادِلُ اللّٰهَ عَنۡهُمۡ يَوۡمَ الۡقِيٰمَةِ اَمۡ
مَّنۡ يَّكُوۡنُ عَلَيۡهِمۡ وَكِيۡلاً
১০৯.) হ্যাঁ,, তোমরা এই অপরাধীদের পক্ষ থেকে দুনিয়ার জীবনেই বির্তক করে
নিলে কিন্তু কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে তাদের জন্য কে বিতর্ক করবে? সেখানে
কে তাদের উকিল হবে?
وَمَنۡ يَّعۡمَلۡ سُوۡٓءًا اَوۡ يَظۡلِمۡ نَفۡسَهٗ ثُمَّ يَسۡتَغۡفِرِ اللّٰهَ يَجِدِ اللّٰهَ غَفُوۡرًا رَّحِيۡمًا
১১০.) যদি কোন ব্যক্তি খারাপ কাজ করে বসে অথবা নিজের ওপর জুলুম করে এবং
এরপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, তাহলে সে আল্লাহকে ক্ষমাকারী ও পরম
দয়ালু হিসেবেই পাবে।
وَمَنۡ يَّكۡسِبۡ اِثۡمًا فَاِنَّمَا يَكۡسِبُهٗ عَلٰى نَفۡسِهٖؕ وَكَانَ اللّٰهُ عَلِيۡمًا حَكِيۡمًا
১১১.) কিন্তু যে ব্যক্তি পাপ কাজ করবে, তার এই পাপ কাজ তার নিজের জন্যই ক্ষতিকর হবে। আল্লাহ সব কথাই জানেন, তিনি জ্ঞানী প্রজ্ঞাময়।
وَمَنۡ يَّكۡسِبۡ خَطِيۡٓـَٔةً اَوۡ اِثۡمًا ثُمَّ يَرۡمِ بِهٖ بَرِيۡٓـًٔا فَقَدِ احۡتَمَلَ بُهۡتَانًا وَّاِثۡمًا مُّبِيۡنًا
১১২.) আর যে ব্যক্তি কোন অন্যায় বা গোনাহর কাজ করে কোন নিরপরাধ ব্যক্তির
ওপর তার দোষ চাপিয়ে দেয়, সে তো বড় মারাত্মক মিথ্যা অপবাদ ও সুস্পষ্ট
গোনাহের বোঝা নিজের মাথায় তুলে নেয়।
وَلَوۡلَا فَضۡلُ اللّٰهِ عَلَيۡكَ وَرَحۡمَتُهٗ لَهَمَّتۡ طَّآٮِٕفَةٌ
مِّنۡهُمۡ اَنۡ يُّضِلُّوۡكَؕ وَمَا يُضِلُّوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡفُسَهُمۡ
وَمَا يَضُرُّوۡنَكَ مِنۡ شَىۡءٍؕ وَاَنۡزَلَ اللّٰهُ عَلَيۡكَ الۡكِتٰبَ
وَالۡحِكۡمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمۡ تَكُنۡ تَعۡلَمُؕ وَكَانَ فَضۡلُ
اللّٰهِ عَلَيۡكَ عَظِيۡمًا
১১৩.) হে নবী! তোমার প্রতি যদি আল্লাহর অনুগ্রহ না হতো এবং তার রহমত যদি
তোমার সাথে সংযুক্ত না থাকতো, তাহলে তাদের মধ্য থেকে একটি দলতো তোমাকে
বিভ্রান্ত করার ফায়সালা করেই ফেলেছিল। অথচ প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেদের ছাড়া
আর কাউকে বিভ্রান্ত করছিল না এবং তারা তোমার কোন ক্ষতি করতে পারতো না।
আল্লাহ তোমার ওপর কিতাব ও হিকমত নাযিল করেছেন, এমন সব বিষয় তোমাকে
শিখিয়েছেন যা তোমার জানা ছিল না এবং তোমার প্রতি তাঁর অনুগ্রহ অনেক বেশী।
لَا خَيۡرَ فِىۡ كَثِيۡرٍ مِّنۡ نَّجۡوٰٮهُمۡ اِلَّا مَنۡ اَمَرَ
بِصَدَقَةٍ اَوۡ مَعۡرُوۡفٍ اَوۡ اِصۡلَاحٍۭۢ بَيۡنَ النَّاسِؕ وَمَن
يَّفۡعَلۡ ذٰلِكَ ابۡتِغَآءَ مَرۡضَاتِ اللّٰهِ فَسَوۡفَ نُؤۡتِيۡهِ
اَجۡرًا عَظِيۡمًا
১১৪.) লোকদের অধিকাংশ গোপন সলা-পরামর্শে কোন কল্যাণ থাকে না। তবে যদি কেউ
গোপনে সাদ্কা ও দান –খয়রাতের উপদেশ দেয় অথবা কোন সৎকাজের জন্য বা জনগণের
পারস্পরিক বিষয়ের সংশোধন ও সংস্কার সাধনের উদ্দেশ্যে কাউকে কিছু বলে, তাহলে
অবশ্য এটি ভালো কথা। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যে কেউ এমন
পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তাকে আমি বিরাট পুরস্কার দান করবো।
وَمَنۡ يُّشَاقِقِ الرَّسُوۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الۡهُدٰى
وَيَتَّبِعۡ غَيۡرَ سَبِيۡلِ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ نُوَلِّهٖ مَا تَوَلّٰى
وَنُصۡلِهٖ جَهَنَّمَؕ وَسَآءَتۡ مَصِيۡرًا
১১৫.) কিন্তু যে ব্যক্তি রসূলের বিরোধীতায় কোমর বাঁধে এবং ঈমানদারদের পথ
পরিহার করে অন্য পথে চলে, অথচ তার সামনে সত্য–সঠিক পথ সুস্পষ্ট হয়ে গেছে,
তাকে আমি সেদিকেই চালাবো যেদিকে সে চলে গেছে এবং তাকে জাহান্নামে ঠেলে
দেবো, যা নিকৃষ্টতম আবাস।
اِنَّ اللّٰهَ لَا يَغۡفِرُ اَنۡ يُّشۡرَكَ بِهٖ وَيَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ
ذٰلِكَ لِمَنۡ يَّشَآءُؕ وَمَنۡ يُّشۡرِكۡ بِاللّٰهِ فَقَدۡ ضَلَّ
ضَلٰلاًۢ بَعِيۡدًا
১১৬.) আল্লাহ কেবলমাত্র শিরকের গোনাহ মাফ করেন না। এছাড়া আর যাবতীয় গোনাহ
তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে আর কাউকে শরীক করে,
সে গোমরাহীর মধ্যে অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
اِنۡ يَّدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِهٖۤ اِلَّاۤ اِنٰثًاۚ وَّاِنۡ يَّدۡعُوۡنَ اِلَّا شَيۡطٰنًا مَّرِيۡدًاۙ
১১৭.) এ ধরনের লোকেরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে দেবীর পূজা করে। তারা সেই বিদ্রোহী শয়তানের পূজা করে,
لَّعَنَهُ اللّٰهُۘ وَقَالَ لَاَتَّخِذَنَّ مِنۡ عِبَادِكَ نَصِيۡبًا مَّفۡرُوۡضًاۙ
১১৮.) যাকে আল্লাহ অভিশপ্ত করেছেন। (তারা সেই শয়তানের আনুগত্য করছে) যে
আল্লাহকে বলেছিল, “আমি তোমার বান্দাদের থেকে একটি নির্দিষ্ট অংশ নিয়েই
ছাড়বো।
وَّلَاُضِلَّنَّهُمۡ وَلَاُمَنِّيَنَّهُمۡ وَلَاٰمُرَنَّهُمۡ
فَلَيُبَتِّكُنَّ اٰذَانَ الۡاَنۡعَامِ وَلَاَمُرَنَّهُمۡ فَلَيُغَيِّرُنَّ
خَلۡقَ اللّٰهِؕ وَمَنۡ يَّتَّخِذِ الشَّيۡطٰنَ وَلِيًّا مِّنۡ دُوۡنِ
اللّٰهِ فَقَدۡ خَسِرَ خُسۡرَانًا مُّبِيۡنًا
১১৯.) আমি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করবো। তাদেরকে আশার ছলনায় বিভ্রান্ত করবো। আমি
তাদেরকে হুকুম করবো এবং আমার হুকুমে তারা পশুর কান ছিঁড়বেই। আমি তাদেরকে
হুকুম করবো এবং আমার হুকুমে তারা আল্লাহর সৃষ্টি আকৃতিতে রদবদল করে
ছাড়বেই।” যে ব্যক্তি আল্লাহকে বাদ দিয়ে এই শয়তানকে বন্ধু ও অভিভাবক
বানিয়েছে সে সুস্পষ্ট ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
يَعِدُهُمۡ وَيُمَنِّيۡهِمۡؕ وَمَا يَعِدُهُمُ الشَّيۡطٰنُ اِلَّا غُرُوۡرًا
১২০.) সে তাদের কাছে ওয়াদা করে এবং তাদেরকে নানা প্রকার আশা দেয়, কিন্তু শয়তানের সমস্ত ওয়াদা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।
اُولٰٓٮِٕكَ مَاۡوٰٮهُمۡ جَهَنَّمُ وَلَا يَجِدُوۡنَ عَنۡهَا مَحِيۡصًا
১২১.) এ সব লোকের আবাস হচ্ছে জাহান্নাম। সেখান থেকে নিষ্কৃতির কোন পথ তারা পাবে না।
وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوۡا الصّٰلِحٰتِ سَنُدۡخِلُهُمۡ جَنّٰتٍ
تَجۡرِىۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَاۤ اَبَدًاؕ وَعۡدَ
اللّٰهِ حَقًّاؕ وَمَنۡ اَصۡدَقُ مِنَ اللّٰهِ قِيۡلاً
১২২.) আর যারা ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তাদেরকে আমি এমন সব বাগীচায় প্রবেশ
করাবো যার নিম্নদেশ দিয়ে ঝরণাধারা প্রবাহিত হতে থাকবে এবং তারা সেখানে
থাকবে চিরস্থায়ীভাবে। এটি আল্লাহর সাচ্চা ওয়াদা। আর আল্লাহর চাইতে বেশী
সত্যবাদী আর কে হতে পারে?
لَّيۡسَ بِاَمَانِيِّكُمۡ وَلَاۤ اَمَانِىِّ اَهۡلِ الۡكِتٰبِؕ مَنۡ
يَّعۡمَلۡ سُوۡٓءًا يُّجۡزَ بِهٖۙ وَلَا يَجِدۡ لَهٗ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ
وَلِيًّا وَّلَا نَصِيۡرًا
১২৩.) চূড়ান্ত পরিণতি না তোমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার ওপর নির্ভর করছে, না আহলি
কিতাবদের আশা- আকাঙ্ক্ষার ওপর। অসৎকাজ যে করবে সে তার ফল ভোগ করবে এবং
আল্লাহর মোকাবিলায় সে নিজের কোন সমর্থক ও সাহায্যকারী পাবে না।
وَمَنۡ يَّعۡمَلۡ مِنَ الصّٰلِحٰتِ مِنۡ ذَكَرٍ اَوۡ اُنۡثٰى وَهُوَ
مُؤۡمِنٌ فَاُولٰٓٮِٕكَ يَدۡخُلُوۡنَ الۡجَنَّةَ وَلَا يُظۡلَمُوۡنَ
نَقِيۡرًا
১২৪.) আর যে ব্যক্তি কোন সৎকাজ করবে, সে পুরুষ বা নারী যেই হোক না কেন, তবে
যদি সে মুমিন হয়, তাহলে এই ধরনের লোকেরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের
এক অণু পরিমাণ অধিকারও হরণ করা হবে না।
وَمَنۡ اَحۡسَنُ دِيۡنًا مِّمَّنۡ اَسۡلَمَ وَجۡهَهٗ لِلّٰهِ وَهُوَ
مُحۡسِنٌ وَّاتَّبَعَ مِلَّةَ اِبۡرٰهِيۡمَ حَنِيۡفًاؕ وَاتَّخَذَ اللّٰهُ
اِبۡرٰهِيۡمَ خَلِيۡلاً
১২৫.) সেই ব্যক্তির চাইতে ভালো আর কার জীবনধারা হতে পারে, যে আল্লাহর সামনে
আনুগত্যের শির নত করে দিয়েছে, সৎনীতি অবলম্বন করেছে এবং একনিষ্ট হয়ে
ইবরাহীমের পদ্ধতি অনুসরণ করেছে? সেই ইবরাহীমের পদ্ধতি, যাকে আল্লাহ নিজের
বন্ধু বানিয়ে নিয়েছিলেন।
وَلِلّٰهِ مَا فِىۡ السَّمٰوٰتِ وَمَا فِىۡ الۡاَرۡضِؕ وَكَانَ اللّٰهُ بِكُلِّ شَىۡءٍ مُّحِيۡطًا
১২৬.) আসমান ও যমীনের মধ্যে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর। আর আল্লাহ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।
وَيَسۡتَفۡتُوۡنَكَ فِىۡ النِّسَآءِؕ قُلِ اللّٰهُ يُفۡتِيۡكُمۡ
فِيۡهِنَّۙ وَمَا يُتۡلٰى عَلَيۡكُمۡ فِىۡ الۡكِتٰبِ فِىۡ يَتٰمَى
النِّسَآءِ الّٰتِىۡ لَا تُؤۡتُوۡنَهُنَّ مَا كُتِبَ لَهُنَّ
وَتَرۡغَبُوۡنَ اَنۡ تَنۡكِحُوۡهُنَّ وَالۡمُسۡتَضۡعَفِيۡنَ مِنَ
الۡوِلۡدَانِۙ وَاَنۡ تَقُوۡمُوۡا لِلۡيَتٰمٰى بِالۡقِسۡطِؕ وَمَا
تَفۡعَلُوۡا مِنۡ خَيۡرٍ فَاِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِهٖ عَلِيۡمًا
১২৭.) লোকেরা মেয়েদের ব্যাপারে তোমার কাছে ফতোয়া জিজ্ঞেস করছে। বলে দাও,
আল্লাহ তাদের ব্যাপারে তোমাদেরকে ফতোয়া দেন এবং একই সাথে সেই বিধানও স্মরণ
করিয়ে দেন, যা প্রথম থেকে এই কিতাবে তোমাদের শুনানো হচ্ছে। অর্থাৎ এই এতিম
মেয়েদের সম্পর্কিত বিধানসমূহ, যাদের হক তোমরা আদায় করছো না এবং যাদেরকে
বিয়ে দিতে তোমরা বিরত থাকছো (অথবা লোভের বশবর্তী হয়ে নিজেরাই যাদেরকে বিয়ে
করতে চাও) । আর যে শিশুরা কোন ক্ষমতা রাখে না তাদের সম্পর্কিত বিধানসমূহ।
আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন, এতিমদের সাথে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে
ইনসাফের নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকো এবং যে কল্যাণ তোমরা করবে তা আল্লাহর
অগোচর থাকবে না।
وَاِنِ امۡرَاَةٌ خَافَتۡ مِنۡۢ بَعۡلِهَا نُشُوۡزًا اَوۡ اِعۡرَاضًا
فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡهِمَاۤ اَنۡ يُّصۡلِحَا بَيۡنَهُمَا صُلۡحًاؕ
وَالصُّلۡحُ خَيۡرٌؕ وَاُحۡضِرَتِ الۡاَنۡفُسُ الشُّحَّؕ وَاِنۡ
تُحۡسِنُوۡا وَتَتَّقُوۡا فَاِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ
خَبِيۡرًا
১২৮.) যখনই কোন স্ত্রীলোক নিজের স্বামীর কাছ থেকে অসদাচরণ অথবা উপেক্ষা
প্রদর্শনের আশঙ্কা করে, তারা দু’জনে (কিছু অধিকারের কমবেশীর ভিত্তিতে) যদি
পরস্পর সন্ধি করে নেয়, তাহলে এতে কোন দোষ নেই। যে কোন অবস্থায়ই সন্ধি
উত্তম। মন দ্রুত সংকীর্ণতার দিকে ঝুঁকে পড়ে। কিন্তু যদি তোমরা পরোপকার করো ও
আল্লাহভীতি সহকারে কাজ করো, তাহলে নিশ্চিত জেনে রাখো, আল্লাহ তোমাদের এই
কর্মনীতি সম্পর্কে অনবহিত থাকবেন না।
وَلَنۡ تَسۡتَطِيۡعُوۡۤا اَنۡ تَعۡدِلُوۡا بَيۡنَ النِّسَآءِ وَلَوۡ
حَرَصۡتُمۡۚ فَلَا تَمِيۡلُوۡا كُلَّ الۡمَيۡلِ فَتَذَرُوۡهَا
كَالۡمُعَلَّقَةِؕ وَاِنۡ تُصۡلِحُوۡا وَتَتَّقُوۡا فَاِنَّ اللّٰهَ كَانَ
غَفُوۡرًا رَّحِيۡمًا
১২৯.) স্ত্রীদের মধ্যে পুরোপুরি ইনসাফ করা তোমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তোমরা
চাইলেও এ ক্ষমতা তোমাদের নেই। কাজেই (আল্লাহর বিধানের উদ্দেশ্য পূর্ণ করার
জন্য এটিই যথেষ্ট যে, ) এক স্ত্রীকে একদিকে ঝুলিয়ে রেখে অন্য স্ত্রীর প্রতি
ঝুঁকে পড়বে না। যদি তোমরা নিজেদের কর্মনীতির সংশোধন করো এবং আল্লাহকে ভয়
করতে থাকো, তাহলে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
وَاِنۡ يَّتَفَرَّقَا يُغۡنِ اللّٰهُ كُلاًّ مِّنۡ سَعَتِهٖؕ وَكَانَ اللّٰهُ وٰسِعًا حَكِيۡمًا
১৩০.) কিন্তু স্বামী-স্ত্রী যদি পরস্পর থেকে আলাদা হয়েই যায়, তাহলে আল্লাহ
তার বিপুল ক্ষমতার সাহায্যে প্রত্যেককে অন্যের মুখাপেক্ষিতা থেকে মুক্ত
করে দেবেন। আল্লাহ ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী এবং তিনি মহাজ্ঞানী।
وَلِلّٰهِ مَا فِىۡ السَّمٰوٰتِ وَمَا فِىۡ الۡاَرۡضِؕ وَلَقَدۡ
وَصَّيۡنَا الَّذِيۡنَ اُوۡتُوۡا الۡكِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِكُمۡ وَاِيَّاكُمۡ
اَنِ اتَّقُوۡا اللّٰهَؕ وَاِنۡ تَكۡفُرُوۡا فَاِنَّ لِلّٰهِ مَا فِىۡ
السَّمٰوٰتِ وَمَا فِىۡ الۡاَرۡضِؕ وَكَانَ اللّٰهُ غَنِيًّا حَمِيۡدًا
১৩১.) আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর মালিকানাধীন। তোমাদের
পূর্বে যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছিলাম তাদেরকে এবং তোমাদেরকেও আল্লাহর ভয় করে
কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। তোমরা না মানতে চাও না মানো, কিন্তু আকাশ ও
পৃথিবীর সমস্ত জিনিসের মালিক একমাত্র আল্লাহ। তিনি অভাব মুক্ত ও সমস্ত
প্রংশসার অধিকারী।
وَلِلّٰهِ مَا فِىۡ السَّمٰوٰتِ وَمَا فِىۡ الۡاَرۡضِؕ وَكَفٰى بِاللّٰهِ وَكِيۡلاً
১৩২.) হ্যাঁ, আল্লাহ আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সবকিছুর মালিক। আর কার্যসম্পাদনের জন্য তিনিই যথেষ্ট।
اِنۡ يَّشَاۡ يُذۡهِبۡكُمۡ اَيُّهَا النَّاسُ وَيَاۡتِ بِاٰخَرِيۡنَؕ وَكَانَ اللّٰهُ عَلٰى ذٰلِكَ قَدِيۡرًا
১৩৩.) তিনি চাইলে তোমাদেরকে সরিয়ে দিয়ে তোমাদের জায়গায় অন্যদেরকে নিয়ে আসবেন এবং তিনি এ ব্যাপারে পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন।
مَّنۡ كَانَ يُرِيۡدُ ثَوَابَ الدُّنۡيَا فَعِنۡدَ اللّٰهِ ثَوَابُ
الدُّنۡيَا وَالۡاٰخِرَةِؕ وَكَانَ اللّٰهُ سَمِيۡعًۢا بَصِيۡرًا
১৩৪.) যে ব্যক্তি কেবলমাত্র ইহকালের পুরস্কার চায়, তার জেনে রাখা উচিত,
আল্লাহর কাছে ইহকাল ও পরকাল উভয়স্থানের পুরস্কার আছে এবং আল্লাহ সবকিছু
শোনেন ও সবকিছু দেখেন।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا كُوۡنُوۡا قَوَّامِيۡنَ بِالۡقِسۡطِ
شُهَدَآءَ لِلّٰهِ وَلَوۡ عَلٰٓى اَنۡفُسِكُمۡ اَوِ الۡوَالِدَيۡنِ
وَالۡاَقۡرَبِيۡنَؕ اِنۡ يَّكُنۡ غَنِيًّا اَوۡ فَقِيۡرًا فَاللّٰهُ
اَوۡلٰى بِهِمَا فَلَا تَتَّبِعُوۡا الۡهَوٰٓى اَنۡ تَعۡدِلُوۡاۚ وَاِنۡ
تَلۡوٗۤا اَوۡ تُعۡرِضُوۡا فَاِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ
خَبِيۡرًا
১৩৫.) হে ঈমানদারগণ! ইনসাফের পতাকাবাহী ও আল্লাহর সাক্ষী হয়ে যাও, তোমাদের
ইনসাফ ও সাক্ষ্য তোমাদের নিজেদের ব্যক্তিসত্তার অথবা তোমাদের বাপ-মা ও
আত্মীয়-স্বজনদের বিরুদ্ধে গেলেও। উভয় পক্ষ ধনী বা অভাবী যাই হোক না কেন
আল্লাহ তাদের চাইতে অনেক বেশী কল্যাণকামী। কাজেই নিজেদের কামনার বশবর্তী
হয়ে ইনসাফ থেকে বিরত থেকো না। আর যদি তোমরা পেঁচালো কথা বলো অথবা সত্যতাকে
পাশ কাটিয়ে চলো, তাহলে জেনে রাখো, তোমরা যা কিছু করছো আল্লাহ তার খবর
রাখেন।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اٰمِنُوۡا بِاللّٰهِ وَرَسُوۡلِهٖ
وَالۡكِتٰبِ الَّذِىۡ نَزَّلَ عَلٰى رَسُوۡلِهٖ وَالۡكِتٰبِ الَّذِىۡۤ
اَنۡزَلَ مِنۡ قَبۡلُؕ وَمَنۡ يَّكۡفُرۡ بِاللّٰهِ وَمَلٰٓٮِٕكَتِهٖ
وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلاًۢ
بَعِيۡدًا يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اٰمِنُوۡا بِاللّٰهِ
وَرَسُوۡلِهٖ وَالۡكِتٰبِ الَّذِىۡ نَزَّلَ عَلٰى رَسُوۡلِهٖ وَالۡكِتٰبِ
الَّذِىۡۤ اَنۡزَلَ مِنۡ قَبۡلُؕ وَمَنۡ يَّكۡفُرۡ بِاللّٰهِ
وَمَلٰٓٮِٕكَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِ فَقَدۡ
ضَلَّ ضَلٰلاًۢ بَعِيۡدًا
১৩৬.) হে ঈমানদারগণ! ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি, তাঁর রসূলের প্রতি, আল্লাহ
তাঁর রসূলের ওপর যে কিতাব নাযিল করেছেন তার প্রতি এবং পূর্বে তিনি যে কিতাব
নাযিল করেছেন তার প্রতি। যে ব্যক্তি আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাবর্গ, তাঁর
কিতাবসমূহ, তাঁর রসূলগণ ও পরকালের প্রতি কুফরী করলো সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহুদূর
চলে গেলো।
اِنَّ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا ثُمَّ كَفَرُوۡا ثُمَّ اٰمَنُوۡا ثُمَّ
كَفَرُوۡا ثُمَّ ازۡدَادُوۡا كُفۡرًا لَّمۡ يَكُنِ اللّٰهُ لِيَغۡفِرَ
لَهُمۡ وَلَا لِيَهۡدِيَهُمۡ سَبِيۡلاَؕ
১৩৭.) অবশ্যি যেসব লোক ঈমান এনেছে তারপর কুফরী করেছে, আবার ঈমান এনেছে আবার
কুফরী করেছে, তারপর নিজেদের কুফরীর মধ্যে এগিয়ে যেতে থেকেছে, আল্লাহ কখনো
তাদেরকে মাফ করবেন না এবং কখনো তাদেরকে সত্য-সঠিক পথও দেখাবেন না।
بَشِّرِ الۡمُنٰفِقِيۡنَ بِاَنَّ لَهُمۡ عَذَابًا اَلِيۡمًاۙ
১৩৮.) আর যেসব মুনাফিক ঈমানদারদেরকে বাদ দিয়ে কাফেরদেরকে বন্ধু বানায় তাদের
জন্য যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রয়েছে, এ ‘সুসংবাদটি’ তাদেরকে জানিয়ে
দাও।
ۨالَّذِيۡنَ يَتَّخِذُوۡنَ الۡكٰفِرِيۡنَ اَوۡلِيَآءَ مِنۡ دُوۡنِ
الۡمُؤۡمِنِيۡنَؕ اَيَبۡتَغُوۡنَ عِنۡدَهُمُ الۡعِزَّةَ فَاِنَّ
الۡعِزَّةَ لِلّٰهِ جَمِيۡعًاؕ
১৩৯.) এরা কি মর্যাদা লাভের সন্ধানে তাদের কাছে যায়? অথচ সমস্ত মর্যাদা একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত।
وَقَدۡ نَزَّلَ عَلَيۡكُمۡ فِىۡ الۡكِتٰبِ اَنۡ اِذَا سَمِعۡتُمۡ اٰيٰتِ
اللّٰهِ يُكۡفَرُ بِهَا وَيُسۡتَهۡزَاُبِهَا فَلَا تَقۡعُدُوۡا مَعَهُمۡ
حَتّٰى يَخُوۡضُوۡا فِىۡ حَدِيۡثٍ غَيۡرِهٖۤۖ اِنَّكُمۡ اِذًا
مِّثۡلُهُمۡؕ اِنَّ اللّٰهَ جَامِعُالۡمُنٰفِقِيۡنَ وَالۡكٰفِرِيۡنَ
فِىۡ جَهَنَّمَ جَمِيۡعَاۙ
১৪০.) আল্লাহ এই কিতাবে তোমাদের পূর্বেই হুকুম দিয়েছেন, যেখানে তোমরা
আল্লাহর আয়াতের বিরুদ্ধে কুফরী কথা বলতে ও তার প্রতি বিদ্রূপবাণ নিক্ষেপ
করতে শুনবে সেখানে বসবে না, যতক্ষন না লোকেরা অন্য প্রসঙ্গে ফিরে আসে।
অন্যথায় তোমরাও তাদের মতো হবে। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ মুনাফিক ও
কাফেরদেরকে জাহান্নামে একই জায়গায় একত্র করবেন।
الَّذِيۡنَ يَتَرَبَّصُوۡنَ بِكُمۡۚ فَاِنۡ كَانَ لَكُمۡ فَتۡحٌ مِّنَ
اللّٰهِ قَالُوۡۤا اَلَمۡ نَكُنۡ مَّعَكُمۡۖ وَاِنۡ كَانَ لِلۡكٰفِرِيۡنَ
نَصِيۡبٌۙ قَالُوۡۤا اَلَمۡ نَسۡتَحۡوِذۡ عَلَيۡكُمۡ وَنَمۡنَعۡكُمۡ مِّنَ
الۡمُؤۡمِنِيۡنَؕ فَاللّٰهُ يَحۡكُمُ بَيۡنَكُمۡ يَوۡمَ الۡقِيٰمَةِؕ
وَلَنۡ يَّجۡعَلَ اللّٰهُ لِلۡكٰفِرِيۡنَ عَلَى الۡمُؤۡمِنِيۡنَ
سَبِيۡلاً
১৪১.) এই মুনাফিকরা তোমাদের ব্যাপারে অপেক্ষা করছে। তারা দেখছে পানি কোন্
দিকে গড়ায়। যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের বিজয় সূচিত হয় তাহলে তারা এসে
বলবে, আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না? আর যদি কাফেরদের পাল্লা ভারী থাকে
তাহলে তাদেরকে বলবে, আমরা কি তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সক্ষম ছিলাম না?
এরপরও আমরা মুসলমানদের হাত থেকে তোমাদেরকে রক্ষা করেছি। কাজেই কিয়ামতের দিন
তোমাদের ও তাদের ব্যাপারে ফায়সালা আল্লাহই করে দেবেন। আর (এই ফায়সালায়)
আল্লাহ কাফেরদের জন্য মুসলমানদের ওপর বিজয় লাভ করার কোন পথই রাখেননি।
اِنَّ الۡمُنٰفِقِيۡنَ يُخٰدِعُوۡنَ اللّٰهَ وَهُوَ خَادِعُوْهُمۡۚ
وَاِذَا قَامُوۡۤا اِلَى الصَّلٰوةِ قَامُوۡا كُسَالٰىۙ يُرَآءُوۡنَ
النَّاسَ وَلَا يَذۡكُرُوۡنَ اللّٰهَ اِلَّا قَلِيۡلاً
১৪২.) এই মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করছে। অথচ আল্লাহই তাদেরকে
ধোঁকার মধ্যে ফেলে রেখে দিয়েছেন। তারা যখন নামাযের জন্য ওঠে, আড়মোড়া ভাঙতে
ভাঙতে শৈথিল্য সহকারে নিছক লোক দেখাবার জন্য ওঠে এবং আল্লাহকে খুব কমই
স্মরণ করে।
مُّذَبۡذَبِيۡنَ بَيۡنَ ۖ ذٰلِكَ لَاۤ اِلَىٰ هٰٓؤُلَآءِ وَلَاۤ اِلٰى
هٰٓؤُلَآءِؕ وَمَنۡ يُّضۡلِلِ اللّٰهُ فَلَنۡ تَجِدَ لَهٗ سَبِيۡلاً
১৪৩.) কুফর ও ঈমানের মাঝে দোদুল্যমান অবস্থায় থাকে, না পুরোপুরি এদিকে, না
পুরোপুরি ওদিকে। যাকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করে দিয়েছেন তার জন্য তুমি কোন পথ
পেতে পারো না।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوۡا الۡكٰفِرِيۡنَ
اَوۡلِيَآءَ مِنۡ دُوۡنِ الۡمُؤۡمِنِيۡنَؕ اَتُرِيۡدُوۡنَ اَنۡ
تَجۡعَلُوۡا لِلّٰهِ عَلَيۡكُمۡ سُلۡطٰنًا مُّبِيۡنًا
১৪৪.) হে ঈমানদারগণ! মুমিনদের বাদ দিয়ে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধু হিসেবে
গ্রহণ করো না। তোমরা কি নিজেদের বিরুদ্ধে আল্লাহর হাতে সুস্পষ্ট প্রমাণ
তুলে দিতে চাও?
اِنَّ الۡمُنٰفِقِيۡنَ فِىۡ الدَّرۡكِ الۡاَسۡفَلِ مِنَ النَّارِۚ وَلَنۡ تَجِدَ لَهُمۡ نَصِيۡرًاۙ
১৪৫.) নিশ্চিত জেনো, মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে চলে যাবে এবং তোমরা কাউকে তাদের সাহায্যকারী হিসেবে পাবে না।
اِلَّا الَّذِيۡنَ تَابُوۡا وَاَصۡلَحُوۡا وَاعۡتَصَمُوۡا بِاللّٰهِ
وَاَخۡلَصُوۡا دِيۡنَهُمۡ لِلّٰهِ فَاُولٰٓٮِٕكَ مَعَ الۡمُؤۡمِنِيۡنَؕ
وَسَوۡفَ يُؤۡتِ اللّٰهُ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ اَجۡرًا عَظِيۡمًا
১৪৬.) তবে তাদের মধ্য থেকে যারা তাওবা করবে, নিজেদের কর্মনীতি সংশোধন করে
নেবে, আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরবে এবং নিজেদের দ্বীনকে একনিষ্ঠভাবে
আল্লাহর জন্য নির্ধারিত করে নেবে, তারা মুমিনদের সাথে থাকবে। আর আল্লাহ
নিশ্চিয়ই মুমিনদেরকে মহাপুরস্কার দান করবেন।
مَّا يَفۡعَلُ اللّٰهُ بِعَذَابِكُمۡ اِنۡ شَكَرۡتُمۡ وَاٰمَنۡتُمۡؕ وَكَانَ اللّٰهُ شَاكِرًا عَلِيۡمًا
১৪৭.) আল্লাহর কি প্রয়োজন তোমাদের অযথা শাস্তি দেবার, যদি তোমরা কৃতজ্ঞ
বান্দা হয়ে থাকো। এবং ঈমানের নীতির ওপর চলো? আল্লাহ বড়ই পুরস্কার দানকারী ও
সর্বজ্ঞ।
لَّا يُحِبُّ اللّٰهُ الۡجَهۡرَ بِالسُّوۡٓءِ مِنَ الۡقَوۡلِ اِلَّا مَنۡ ظُلِمَؕ وَكَانَ اللّٰهُ سَمِيۡعًا عَلِيۡمًا
১৪৮.) মানুষ খারাপ কথা বলে বেড়াক, এটা আল্লাহ পছন্দ করেন না। তবে কারো
প্রতি জুলুম করা হলে তার কথা স্বতন্ত্র। আর আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও জানেন।
(মজলুম অবস্থায় তোমাদের খারাপ কথা বলার অধিকার থাকলেও)
اِنۡ تُبۡدُوۡا خَيۡرًا اَوۡ تُخۡفُوۡهُ اَوۡ تَعۡفُوۡا عَنۡ سُوۡٓءٍ فَاِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَفُوًّا قَدِيۡرًا
১৪৯.) যদি তোমরা প্রকাশ্যে ও গোপনে সৎকাজ করে যাও অথবা কমপক্ষে অসৎকাজ থেকে
বিরত থাকো, তাহলে আল্লাহও বড়ই ক্ষমা-গুণের অধিকারী। অথচ তিনি শাস্তি দেবার
পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন।
اِنَّ الَّذِيۡنَ يَكۡفُرُوۡنَ بِاللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَيُرِيۡدُوۡنَ اَنۡ
يُّفَرِّقُوۡا بَيۡنَ اللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَيَقُوۡلُوۡنَ نُؤۡمِنُ بِبَعۡضٍ
وَّنَكۡفُرُ بِبَعۡضٍۙ وَّيُرِيۡدُوۡنَ اَنۡ يَّتَّخِذُوۡا بَيۡنَ ذٰلِكَ
سَبِيۡلاًۙ
১৫০.) যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলদের সাথে কুফরী করে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলদের
মধ্যে পার্থক্য করতে চায় এবং বলে আমরা কাউকে মানবো ও কাউকে মানবো না আর
কুফর ও ঈমানের মাঝখানে একটি পথ বের করতে চায়,
اُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الۡكٰفِرُوۡنَ حَقًّاۚ وَاَعۡتَدۡنَا لِلۡكٰفِرِيۡنَ عَذَابًا مُّهِيۡنًا
১৫১.) তারা সবাই আসলে কট্টর কাফের। আর এহেন কাফেরদের জন্য আমি এমন শাস্তি তৈরী করে রেখেছি, যা তাদেরকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করবে।
وَالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا بِاللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَلَمۡ يُفَرِّقُوۡا بَيۡنَ
اَحَدٍ مِّنۡهُمۡ اُولٰٓٮِٕكَ سَوۡفَ يُؤۡتِيۡهِمۡ اُجُوۡرَهُمۡؕ وَكَانَ
اللّٰهُ غَفُوۡرًا رَّحِيۡمًا
১৫২.) বিপরীত পক্ষে যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলদেরকে মেনে নেয় এবং তাদের
মধ্যে কোন পার্থক্য করে না, তাদেরকে আমি অবশ্যই তার পুরস্কার দান করবো। আর
আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
يَسۡـَٔلُكَ اَهۡلُ الۡكِتٰبِ اَنۡ تُنَزِّلَ عَلَيۡهِمۡ كِتٰبًا مِّنَ
السَّمَآءِ فَقَدۡ سَاَلُوۡا مُوۡسٰٓى اَكۡبَرَ مِنۡ ذٰلِكَ فَقَالُوۡۤا
اَرِنَا اللّٰهَ جَهۡرَةً فَاَخَذَتۡهُمُ الصّٰعِقَةُ بِظُلۡمِهِمۡۚ
ثُمَّ اتَّخَذُوۡا الۡعِجۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡهُمُ الۡبَيِّنٰتُ
فَعَفَوۡنَا عَنۡ ذٰلِكَۚ وَاٰتَيۡنَا مُوۡسٰى سُلۡطٰنًا مُّبِيۡنًا
১৫৩.) এই আহ্লি কিতাবরা যদি আজ তোমার কাছে আকাশ থেকে তাদের জন্য কোন লিখন
অবতীর্ণ করার দাবী করে থাকে, তাহলে ইতিপূর্বে তারা এর চাইতেও বড়
ধৃষ্ঠতাপূর্ণ দাবী মূসার কাছে করেছিল। তারা তো তাঁকে বলেছিল, আল্লাহকে
প্রকাশ্যে আমাদের দেখিয়ে দাও। তাদের এই সীমালংঘনের কারণে অকস্মাৎ তাদের ওপর
বিদ্যুত আপতিত হয়েছিল। তারপর সুস্পষ্ট নিশানীসমূহ দেখার পরও তারা বাছুরকে
উপাস্য রূপে গ্রহণ করেছিল। এরপরও আমি তাদেরকে ক্ষমা করেছি। আমি মূসাকে
সুস্পষ্ট ফরমান দিয়েছি।
وَرَفَعۡنَا فَوۡقَهُمُ الطُّوۡرَ بِمِيۡثَاقِهِمۡ وَقُلۡنَا لَهُمُ
ادۡخُلُوۡا الۡبَابَ سُجَّدًا وَّقُلۡنَا لَهُمۡ لَا تَعۡدُوۡا فِىۡ
السَّبۡتِ وَاَخَذۡنَا مِنۡهُمۡ مِّيۡثَاقًا غَلِيۡظًا
১৫৪.) এবং তূর পাহাড়ে তাদের ওপর উঠিয়ে তাদের থেকে (এই ফরমানে আনুগত্যের)
অঙ্গীকার নিয়েছি। আমি তাদেরকে হুকুম দিয়েছি, সিজ্দানত হয়ে দরজার মধ্যে
প্রবেশ করো। আমি তাদেরকে বলেছি, শনিবারের বিধান লংঘন করো না এবং এর সপক্ষে
তাদের থেকে পাকাপোক্ত অঙ্গীকার নিয়েছি।
فَبِمَا نَقۡضِهِمۡ مِّيۡثَاقَهُمۡ وَكُفۡرِهِمۡ بِاٰيٰتِ اللّٰهِ
وَقَتۡلِهِمُ الۡاَنۡۢبِيَآءَ بِغَيۡرِ حَقٍّ وَّقَوۡلِهِمۡ قُلُوۡبُنَا
غُلۡفٌؕ بَلۡ طَبَعَ اللّٰهُ عَلَيۡهَا بِكُفۡرِهِمۡ فَلَا يُؤۡمِنُوۡنَ
اِلَّا قَلِيۡلاً
১৫৫.) শেষ পর্যন্ত তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য, আল্লাহর আয়াতের ওপর মিথ্যা
আরোপ করার জন্য, নবীদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার জন্য এবং “আমাদের দিল
আবরণের মধ্যে সুরক্ষিত” তাদের এই উক্তির জন্য(তারা অভিশপ্ত হয়েছিল) ।
অথচ মূলত তাদের বাতিল পরস্তির জন্য আল্লাহ তাদের দিলের ওপর মোহর মেরে
দিয়েছেন এবং এ জন্য তারা খুব কমই ঈমান এনে থাকে।
وَّبِكُفۡرِهِمۡ وَقَوۡلِهِمۡ عَلٰى مَرۡيَمَ بُهۡتَانًا عَظِيۡمًاۙ
১৫৬.) তারপর তাদের নিজেদের কুফরীর মধ্যে অনেক দূর অগ্রসর হয়ে মারয়ামের ওপর গুরুতর অপবাদ লাগাবার জন্য
وَّقَوۡلِهِمۡ اِنَّا قَتَلۡنَا الۡمَسِيۡحَ عِيۡسَى ابۡنَ مَرۡيَمَ
رَسُوۡلَ اللّٰهِۚ وَمَا قَتَلُوۡهُ وَمَا صَلَبُوۡهُ وَلٰكِنۡ شُبِّهَ
لَهُمۡؕ وَاِنَّ الَّذِيۡنَ اخۡتَلَفُوۡا فِيۡهِ لَفِىۡ شَكٍّ مِّنۡهُؕ
مَا لَهُمۡ بِهٖ مِنۡ عِلۡمٍ اِلَّا اتِّبَاعَ الظَّنِّۚ وَمَا قَتَلُوۡهُ
يَقِيۡنًاۙ
১৫৭.) এবং তাদের ‘আমরা আল্লাহর রসূল মারয়াম পুত্র ঈসা মসীহ্কে হত্যা করেছি’, এই উক্তির জন্য (তারা অভিশপ্ত হয়েছিল) । অথচ প্রকৃতপক্ষে
তারা তাকে হত্যাও করেনি এবং শূলেও চড়ায়নি বরং ব্যাপারটিকে তাদের জন্য
সন্দিগ্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর যারা এ ব্যাপারে মতবিরোধ করেছে তারাও আসলে
সন্দেহের মধ্যে অবস্থান করছে। তাদের কাছে এ সম্পর্কিত কোন জ্ঞান নেই, আছে
নিছক আন্দাজ-অনুমানের অন্ধ অনুসৃতি। নিঃসন্দেহে তারা ঈসা মসীহকে হত্যা
করেনি।
بَۢل رَّفَعَهُ اللّٰهُ اِلَيۡهِؕ وَكَانَ اللّٰهُ عَزِيۡزًا حَكِيۡمًا
১৫৮.) বরং আল্লাহ তাঁকে নিজের দিকে উঠিয়ে নিয়েছেন। আল্লাহ জবরদস্ত শক্তিশালী ও প্রজ্ঞাময়।
وَاِنۡ مِّنۡ اَهۡلِ الۡكِتٰبِ اِلَّا لَيُؤۡمِنَنَّ بِهٖ قَبۡلَ مَوۡتِهٖۚ وَيَوۡمَ الۡقِيٰمَةِ يَكُوۡنُ عَلَيۡهِمۡ شَهِيۡدًاۚ
১৫৯.) আর আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে এমন একজনও হবে না। যে তার মৃত্যুর পূর্বে
তার ঈমান আনবে না, এবং কিয়ামতের দিন সে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে।
فَبِظُلۡمٍ مِّنَ الَّذِيۡنَ هَادُوۡا حَرَّمۡنَا عَلَيۡهِمۡ طَيِّبٰتٍ
اُحِلَّتۡ لَهُمۡ وَبِصَدِّهِمۡ عَنۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ كَثِيۡرًاۙ
১৬০.) মোটকথা এই ইহুদী মতাবলম্বীদের এহেন জুলুম নীতির জন্য, তাদের মানুষকে ব্যাপকভাবে আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখার জন্য
وَّاَخۡذِهِمُ الرِّبٰوا وَقَدۡ نُهُوۡا عَنۡهُ وَاَكۡلِهِمۡ اَمۡوَالَ
النَّاسِ بِالۡبَاطِلِؕ وَاَعۡتَدۡنَا لِلۡكٰفِرِيۡنَ مِنۡهُمۡ عَذَابًا
اَلِيۡمًا
১৬১.) তাদের সুদ গ্রহণ করার জন্য যা গ্রহণ করতে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল
এবং অন্যায়ভাবে লোকদের ধন-সম্পদ গ্রাস করার জন্য, আমি এমন অনেক পাক-পবিত্র
জিনিস তাদের জন্য হারাম করে দিয়েছি, যা পূর্বে তাদের জন্য হালাল ছিল। আর
তাদের মধ্য থেকে যারা কাফের তাদের জন্য কঠিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তৈরী করে
রেখেছি।
لّٰكِنِ الرّٰسِخُوۡنَ فِىۡ الۡعِلۡمِ مِنۡهُمۡ وَالۡمُؤۡمِنُوۡنَ
يُؤۡمِنُوۡنَ بِمَاۤ اُنۡزِلَ اِلَيۡكَ وَمَاۤ اُنۡزِلَ مِنۡ
قَبۡلِكَؕوَالۡمُقِيۡمِيۡنَ الصَّلٰوةَ وَالۡمُؤۡتُوۡنَ الزَّكٰوةَ
وَالۡمُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰهِ وَالۡيَوۡمِ الۡاٰخِرِؕ اُولٰٓٮِٕكَ
سَنُؤۡتِيۡهِمۡ اَجۡرًا عَظِيۡمًا
১৬২.) কিন্তু তাদের মধ্য থেকে যারা পাকাপোক্ত জ্ঞানের অধিকারী ও ঈমানদার
তারা সবাই সেই শিক্ষার প্রতি ঈমান আনে, যা তোমার প্রতি নাযিল হয়েছে এবং যা
তোমার পূর্বে নাযিল করা হয়েছিল। এ ধরনের ঈমানদার নিয়মিতভাবে নামায
কায়েমকারী, যাকাত আদায়কারী এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী লোকদেরকে আমি
অবশ্যি মহাপুরস্কার দান করবো।
اِنَّاۤ اَوۡحَيۡنَاۤ اِلَيۡكَ كَمَاۤ اَوۡحَيۡنَاۤ اِلٰى نُوۡحٍ
وَّالنَّبِيّٖنَ مِنۡۢ بَعۡدِهٖۚ وَاَوۡحَيۡنَاۤ اِلٰٓى اِبۡرٰهِيۡمَ
وَاِسۡمٰعِيۡلَ وَاِسۡحٰقَ وَيَعۡقُوۡبَ وَالۡاَسۡبَاطِ وَعِيۡسٰى
وَاَيُّوۡبَ وَيُوۡنُسَ وَهٰرُوۡنَ وَسُلَيۡمٰنَۚ وَاٰتَيۡنَا دَاوٗدَ
زَبُوۡرًا
১৬৩.) হে মুহাম্মাদ! আমি তোমার কাছে ঠিক তেমনিভাবে অহী পাঠিয়েছি, যেমন নূহ ও
তার পরবর্তী নবীদের কাছে পাঠিয়ে ছিলাম। আমি ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক,
ইয়াকুব ও ইয়াকুব সন্তানদের কাছে এবং ঈসা, আইয়ুব, ইউনুস, হারুন ও সুলাইমানের
কাছে অহী পাঠিয়েছি। আমি দাউদকে যবূর দিয়েছি।
وَرُسُلاً قَدۡ قَصَصۡنٰهُمۡ عَلَيۡكَ مِنۡ قَبۡلُ وَرُسُلاً لَّمۡ
نَقۡصُصۡهُمۡ عَلَيۡكَؕ وَكَلَّمَ اللّٰهُ مُوۡسٰى تَكۡلِيۡمًاۚ
১৬৪.) এর পূর্বে যেসব নবীর কথা তোমাকে বলেছি তাদের কাছেও আমি অহী পাঠিয়েছি
এবং যেসব নবীর কথা তোমাকে বলিনি তাদের কাছেও। আমি মূসার সাথে কথা বলেছি ঠিক
যেমনভাবে কথা বলা হয়।
رُّسُلاً مُّبَشِّرِيۡنَ وَمُنۡذِرِيۡنَ لِئَلَّا يَكُوۡنَ لِلنَّاسِ
عَلَى اللّٰهِ حُجَّةٌۢ بَعۡدَ الرُّسُلِؕ وَكَانَ اللّٰهُ عَزِيۡزًا
حَكِيۡمًا
১৬৫.) এই সমস্ত রসূলকে সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী বানিয়ে পাঠানো
হয়েছিল, যাতে তাদেরকে রসূল বানিয়ে পাঠাবার পর লোকদের কাছে আল্লাহর
মোকাবিলায় কোন প্রমাণ না থাকে।২০৮ আর আল্লাহ সর্বাবস্থায়ই প্রবল
পরাক্রান্ত ও প্রজ্ঞাময়।
لّٰكِنِ اللّٰهُ يَشۡهَدُ بِمَاۤ اَنۡزَلَ اِلَيۡكَ اَنۡزَلَهٗ
بِعِلۡمِهٖۚ وَالۡمَلٰٓٮِٕكَةُ يَشۡهَدُوۡنَؕ وَكَفٰى بِاللّٰهِ
شَهِيۡدًاؕ
১৬৬.) (লোকেরা চাইলে না মানতে পারে) কিন্তু আল্লাহ সাক্ষ্য দেন, তিনি যা
কিছু তোমাদের ওপর নাযিল করেছেন নিজের জ্ঞানের ভিত্তিতে নাযিল করেছেন এবং এর
ওপর ফেরেশতারাও সাক্ষী, যদিও আল্লাহর সাক্ষী হওয়াই যথেষ্ট হয়।
اِنَّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا وَصَدُّوۡا عَنۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ قَدۡ ضَلُّوۡا ضَلٰلاًۢ بَعِيۡدًا
১৬৭.) যারা নিজেরাই এটা মানতে অস্বীকার করে এবং অন্যদেরকে আল্লাহর পথে চলতে
বাধা দেয় তারা নিঃসন্দেহে ভুল পথে অগ্রসর হয়ে সত্য থেকে অনেক দূরে চলে
গেছে।
اِنَّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا وَظَلَمُوۡا لَمۡ يَكُنِ اللّٰهُ لِيَغۡفِرَ لَهُمۡ وَلَا لِيَهۡدِيَهُمۡ طَرِيۡقًاۙ
১৬৮.) এভাবে যারা কুফরী ও বিদ্রোহের পথ অবলম্বন করে এবং জুলুম-নিপীড়ন চালায়, আল্লাহ তাদেরকে কখনো মাফ করবেন না
اِلَّا طَرِيۡقَ جَهَنَّمَ خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَاۤ اَبَدًاؕ وَكَانَ ذٰلِكَ عَلَى اللّٰهِ يَسِيۡرًا
১৬৯.) এবং তাদেরকে জাহান্নামের পথ ছাড়া আর কোন পথ দেখাবেন না, যেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। আল্লাহর জন্য এটা কোন কঠিন কাজ নয়।
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ قَدۡ جَآءَكُمُ الرَّسُوۡلُ بِالۡحَقِّ مِنۡ
رَّبِّكُمۡ فَاٰمِنُوۡا خَيۡرًا لَّكُمۡؕ وَاِنۡ تَكۡفُرُوۡا فَاِنَّ
لِلّٰهِ مَا فِىۡ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِؕ وَكَانَ اللّٰهُ عَلِيۡمًا
حَكِيۡمًا
১৭০.) হে লোকেরা! এই রসূল তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে হক নিয়ে
এসেছে। কাজেই তোমরা ঈমান আনো তোমাদের জন্যই ভালো। আর যদি অস্বীকার করো,
তাহলে জেনে রাখো, আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর। আল্লাহ
সবকিছু জানেন এবং তিনি প্রজ্ঞাময়।
يٰۤاَهۡلَ الۡكِتٰبِ لَا تَغۡلُوۡا فِىۡ دِيۡنِكُمۡ وَلَا تَقُوۡلُوۡا
عَلَى اللّٰهِ اِلَّا الۡحَقَّؕ اِنَّمَا الۡمَسِيۡحُ عِيۡسَى ابۡنُ
مَرۡيَمَ رَسُوۡلُ اللّٰهِ وَكَلِمَتُهٗۤۚ اَلۡقٰٮهَاۤ اِلٰى مَرۡيَمَ
وَرُوۡحٌ مِّنۡهُ فَاٰمِنُوۡا بِاللّٰهِ وَرُسُلِهٖۚ وَلَا
تَقُوۡلُوۡا ثَلٰثَةٌؕ انتَهُوۡا خَيۡرًا لَّكُمۡؕ اِنَّمَا اللّٰهُ
اِلٰهٌ وَّاحِدٌۚ سُبۡحٰنَهٗۤ اَنۡ يَّكُوۡنَ لَهٗ وَلَدٌۘ لَهٗ مَا فِىۡ
السَّمٰوٰتِ وَمَا فِىۡ الۡاَرۡضِؕ وَكَفٰى بِاللّٰهِ وَكِيۡلاً
১৭১.) হে আহলী কিতাব! নিজেদের দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না আর সত্য
ছাড়া কোন কথা আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করো না। মারয়াম পুত্র ঈসা মসীহ আল্লাহর
একজন রসূল ও একটি ফরমান ছাড়া আর কিছুই ছিল না, যা আল্লাহ মারয়ামের দিকে
পাঠিয়েছিলেন। আর সে একটি রূহ ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে (যে মারয়ামের গর্ভে
শিশুর রূপ ধারণ করেছিল) । কাজেই তোমরা আল্লাহ ও তার রসূলদের প্রতি ঈমান
আনো এবং “তিন” বলো না। নিবৃত্ত হও, এটা তোমাদের জন্যই ভালো। আল্লাহই তো
একমাত্র ইলাহ। কেউ তার পুত্র হবে, তিনি এর অনেক উর্ধ্বে। পৃথিবী ও আকাশের
সবকিছুই তার মালিকানাধীন এবং সে সবের প্রতিপালক ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তিনি
নিজেই যথেষ্ট।
لَّنۡ يَّسۡتَنۡكِفَ الۡمَسِيۡحُ اَنۡ يَّكُوۡنَ عَبۡدًا لِّلَّهِ وَلَا
الۡمَلٰٓٮِٕكَةُ الۡمُقَرَّبُوۡنَؕ وَمَنۡ يَّسۡتَنۡكِفۡ عَنۡ عِبَادَتِهٖ
وَيَسۡتَكۡبِرۡ فَسَيَحۡشُرُهُمۡ اِلَيۡهِ جَمِيۡعًا
১৭২.) মসীহ কখনো নিজের আল্লাহর এক বান্দা হবার ব্যাপারে লজ্জা অনুভব করে না
এবং ঘনিষ্ঠতর ফেরেশতারাও একে নিজেদের জন্য লজ্জাকর মনে করে না। যদি কেউ
আল্লাহর বন্দেগীকে নিজের জন্য লজ্জাকর মনে করে এবং অহংকার করতে থাকে তাহলে
এক সময় আসবে যখন আল্লাহ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে নিজের সামনে হাযির করবেন।
فَاَمَّا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوۡا الصّٰلِحٰتِ فَيُوَفِّيۡهِمۡ
اُجُوۡرَهُمۡ وَيَزِيۡدُهُمۡ مِّنۡ فَضۡلِهٖۚ وَاَمَّا الَّذِيۡنَ
اسۡتَنۡكَفُوۡا وَاسۡتَكۡبَرُوۡا فَيُعَذِّبُهُمۡ عَذَابًا اَلِيۡمًا ۙ
وَّلَا يَجِدُوۡنَ لَهُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ وَلِيًّا وَّلَا نَصِيۡرًا
১৭৩.) যারা ঈমান এনে সৎকর্মনীতি অবলম্বন করেছে তারা সে সময় নিজেদের পূর্ণ
প্রতিদান লাভ করবে এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরো প্রতিদান দেবেন।
আর যারা বন্দেগীকে লজ্জাকর মনে করেছে ও অহংকার করেছে, তাদেরকে আল্লাহ
য্ন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেবেন এবং আল্লাহ ছাড়া আর যার যার সাহায্য ও
পৃষ্ঠপোষকতার ওপর তারা ভরসা করে, তাদের মধ্যে কাউকেও তারা সেখানে পাবে না।
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ قَدۡ جَآءَكُمۡ بُرۡهَانٌ مِّنۡ رَّبِّكُمۡ وَاَنۡزَلۡنَاۤ اِلَيۡكُمۡ نُوۡرًا مُّبِيۡنًا
১৭৪.) হে লোকেরা তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে উজ্জল প্রমাণপত্র এসে
গেছে এবং আমি তোমাদের কাছে এমন আলোক রশ্মি পাঠিয়েছি যা তোমাদের
সুস্পষ্টভাবে পথ দেখিয়ে দেবে।
فَاَمَّا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا بِاللّٰهِ وَاعۡتَصَمُوۡا بِهٖ
فَسَيُدۡخِلُهُمۡ فِىۡ رَحۡمَةٍ مِّنۡهُ وَفَضۡلٍ وَّيَهۡدِيۡهِمۡ اِلَيۡهِ
صِرَاطً مُّسۡتَقِيۡمًا
১৭৫.) এখন যারা আল্লাহর কথা মেনে নেবে এবং তার আশ্রয় খুঁজবে তাদেরকে
আল্লাহ নিজের রহমত, করুণা ও অনুগ্রহের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে নেবেন এবং নিজের
দিকে আসার সোজাপথ দেখিয়ে দেবেন।
يَسۡتَفۡتُوۡنَكَؕ قُلِ اللّٰهُ يُفۡتِيۡكُمۡ فِىۡ الۡكَلٰلَةِؕ اِنِ
امۡرُؤٌا هَلَكَ لَيۡسَ لَهٗ وَلَدٌ وَّلَهٗۤ اُخۡتٌ فَلَهَا نِصۡفُ مَا
تَرَكَۚ وَهُوَ يَرِثُهَاۤ اِنۡ لَّمۡ يَكُنۡ لَّهَا وَلَدٌؕ فَاِنۡ
كَانَتَا اثۡنَتَيۡنِ فَلَهُمَا الثُّلُثٰنِ مِمَّا تَرَكَؕ وَاِنۡ
كَانُوۡۤا اِخۡوَةً رِّجَالاً وَّنِسَآءً فَلِلذَّكَرِ مِثۡلُ حَظِّ
الۡاُنۡثَيَيۡنِؕ يُبَيِّنُ اللّٰهُ لَكُمۡ اَنۡ تَضِلُّوۡاؕ وَاللّٰهُ
بِكُلِّ شَىۡءٍ عَلِيۡمٌ
১৭৬.) লোকেরা তোমার কাছে পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তির ব্যাপারে ফতোয়া
জিজ্ঞেস করছে। বলে দাও, আল্লাহ তোমাদের ফতোয়া দিচ্ছেনঃ যদি কোন ব্যক্তি
নিঃসন্তান মারা যায় এবং তার একটি বোন থাকে, তাহলে সে তার পরিত্যক্ত
সম্পত্তির অর্ধাংশ পাবে। আর যদি বোন নিঃসন্তানা মারা যায় তাহলে ভাই হবে তার
ওয়ারিস। দুই বোন যদি মৃতের ওয়ারিস হয়, তাহলে তারা পরিত্যক্ত সম্পত্তির
দুই-তৃতীয়াংশের হকদার হবে, আর যদি কয়েকজন ভাই ও বোন হয় তাহলে মেয়েদের একভাগ
ও পুরুষের দুইভাগ হবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট বিধান বর্ণনা করেন,
যাতে তোমরা বিভ্রান্ত না হও এবং আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে জানেন।